কুমিল্লার তিতাসে চার বছরের শিশুকে টয়লেটের ভেতর নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষিত শিশুটিকে তার মা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলেও ১০ দিন পর্যন্ত খবর পায়নি থানা পুলিশ। শিশুটি কিছুটা সুস্থবোধ করায় এক সপ্তাহ পর ধর্ষিতার মা বিধবা চা বিক্রেতা বাদী হয়ে একজনকে আসামি করে অবশেষে মামলা দায়ের করেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬শে নভেম্বর অন্যান্য দিনের মতো মা’র সঙ্গে তার চার বছরের শিশুকন্যা উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের রঘুনাথপুর বাজারে অবস্থান করছিল। বিকাল ৩টায় মা দোকান থেকে প্রায় ৫শ’ গজ দূরে লাকড়ি আনতে যান। দোকানে ফিরে এসে তার মেয়েকে না পেয়ে উপস্থিত অন্য শিশুদের কাছে জানতে পায় সৌরভ তাকে টয়লেটের ভেতর নিয়ে গেছে। রঘুনাথপুর গ্রামের আ. রহমানের টয়লেটে কাছে গেলে মেয়ের কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে মা। এ সময় দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে যায় সৌরভ।
শিশুটি বিবস্ত্র ছিল ও তার শরীর দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সৌরভ (১৮) রঘুনাথপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। এদিকে ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার, ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রামপুলিশ, দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তি কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত না করায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকে এ ঘটনাকে দারিদ্র্যের অভিশাপ বলে অবহিত করেন। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষিতার মা মামলা করার পর শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নড়েচড়ে উঠেন। পলাতক একমাত্র আসামি সৌরভকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ভিটিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, ঘটনার পরপর শিশুটির মা শিশুটিকে নিয়ে আমার কাছে এসে বিষয়টি জানায়। তখন আমি শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠায়। ৬-৭ দিন পর হাসপাতালের কিছু কাগজপত্র নিয়ে আবার আমার কাছে এলে, আমি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পবিরার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সরফরাজ হোসেন খান জানান, যখন পুলিশ কেসগুলো আমাদের এখানে ভর্তি থাকে তখন আমরা স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করি। যেহেতু আমরা রোগীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছি তাই এটি ভিকটিম বা ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অপমৃত্যু, হত্যাকা- বিশেষ করে নারী ও শিশু ধর্ষণ বা নির্যাতিত হয়ে যদি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন, তাৎক্ষণিক বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানাতে বাধ্য। তবে শিশু ধর্ষণের বিষয়টি স্থানীয় পর্যায় থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের অবহিত করেনি এটা খুবই দুঃখজনক।