× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সেই নারীর কথা কখনই ভুলবো না (৪০)

এক্সক্লুসিভ

কাজল ঘোষ
৩০ ডিসেম্বর ২০২০, বুধবার

ভোট গণনায় সময় লাগছে অনেক। আমার শপথ নেয়ার আগে বিজয় ঘোষণার সময় ছিল মাত্র এক মাস। এই নির্বাচনী তৎপরতার মধ্যেই আমি মায়ের মৃত্যুতে শোক পালন করেছি। এক বছর আগে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। এর মধ্যেই দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচনী প্রচার যুদ্ধ চলছিল। আমি সামনের কোনো এক অধ্যায়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবো। কিন্তু না বললেই নয়, মা হারানোর ব্যথায় ভেতরে ভেতরে পীড়ন অনুভব করছিলাম। আমি জানি, এই নির্বাচন তার কাছে কি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
আমি কীভাবে বোঝাবো তিনি এটা দেখতে পারলে কি বলতেন।
২০১১ সালে জানুয়ারির ৩ তারিখ আমি যখন ক্যালিফোর্নিয়া মিউজিয়ামের সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশ করছি তখন সেখানে উপস্থিত নারীরা ইতিহাস, শিল্প, সংস্কারের আওয়াজে শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে পুরো হলরুম দাঁড়িয়ে যায়। আমরা একটি চমৎকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। এই আয়োজনে বিশপ টি ল্যারি কার্কল্যান্ড সিনিয়র সূচনা বক্তব্য রেখেছিলেন এবং সবশেষে ছিল গসপেল সংগীত পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে পতাকা উড়ছিল, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পর্যবেক্ষকরা ব্যালকনি থেকে নিচে নেমে আসছিলেন। মিসেস শেলটনের কাছ থেকে আনা বাইবেল ধরেছিল মায়া আর আমি তা সাক্ষী রেখে শপথ নিয়েছিলাম। তবে আমি মনে করতে পারি ঐ দিনের সবচেয়ে চিন্তার বিষয় ছিল আমার বক্তব্যে আমার মায়ের কথা বলা।
আমি বারবার চর্চা করছিলাম এবং প্রতিবারই ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু এটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই কক্ষে মায়ের নামটি বলা। কারণ, কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব হতো না যদি তার সহযোগিতা না পেতাম।
আমি চিৎকারের মধ্যেই বললাম, আজ আমি শপথ করে নিশ্চিতভাবেই বলছি, প্রতিটি ক্যালিফোর্নিয়ানকে গুরুত্ব দেয়াই আমার নীতি। পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই নীতি কার্যকর হয়েছিল।   
একমাসের মাথায় লস অ্যানজেলেসের ৩৭ হাজার বাড়ির মালিক ব্যাংকের মর্টগেজ পরিবর্তনের জন্য আবেদন করে এবং বাড়িতে থাকা নিশ্চিত করে। ফ্লোরিডাতেও এত বড় লাইন হয়েছিল যে কয়েকদিন সময় লেগেছিল তা নিরসনে। এই নিয়ে স্কট পেলি সিক্সটি মিনিট অনুষ্ঠানে বলেছিলেন ১৯৩০ সালে আমরা খাবারের জন্য এমন লাইন দিতাম। আমেরিকায় যখন নতুন সূর্য উঠছে আপনি তখন দেখছেন সেই রকম দীর্ঘ লাইন।
প্রথম দিন আমি আমার অফিসে সিনিয়র টিমের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হই। তাদের সকলকে বলি যে, এখনই আমাদের এ নিয়ে কাজ করা দরকার এবং মাল্টি স্টেট তদন্ত চালু করা উচিত। আমি আমার টিমের দীর্ঘদিনের সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের চিফ কাউন্সেলর মিশেল ত্রনকসো এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের বিশেষ সহকারী ব্রায়ান নেলসনকে এ কাজে নিযুক্ত করি।
আমি তাদের বলি অতি দ্রুত তা খুঁজে বের করতে।
অফিসের ভেতরে আমরা একটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি  নেই। অফিসের বাইরেও আমরা বলতে লাগলাম- এ যুদ্ধে কারা অংশ নিতে চায়? প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানে আমরা দলবদ্ধভাবে মানুষকে অংশ নিতে দেখেছি। আর তা পাঁচ দশ বা বিশ এভাবে। যারা এসেছে আশা দেখতে এবং আমার সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে কথা বলেছে সহযোগিতার। তাদের প্রায় সকলেই নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছে। এগুলোর মধ্যে ছিল মর্টগেজ ডকুমেন্ট, বাড়ি ছাড়ার নোটিশ এবং হাতে লেখা নির্দেশনা। অনেকেই আমাকে খুঁজে পেতে শত শত মাইল দূর থেকে গাড়ি চালিয়ে এসেছে।
আমি সেই নারীর কথা কখনই ভুলবো না যিনি একটি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে কাজ করছিলেন তখন আমি ছিলাম স্টানফোর্ডে। দর্শকসারিতে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন এবং তার চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছিল মুখাবয়বে। তার কথায় ছিল হতাশা। ‘আমার সাহায্য দরকার। তুমি আমাকে সাহায্য করতে পারো। আমি চাই, তুমি ব্যাংকগুলোতে ফোন করে জিজ্ঞাসা করো আমি যেন আমার বাড়িতে থাকতে পারি। আমাকে দয়া করো, আমি ভিক্ষা চাইছি।’ এটা ছিল সত্যিই হৃদয়বিদারক।
আমি আরো লাখো মানুষের এমনটি হয়েছে তা জানি। যারা বাঁচার জন্য লড়ছে। যাদের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ব্যক্তিগতভাবে পৌঁছানোর সক্ষমতা নেই। তাই আমরা সরাসরি তাদের কাছে যাই এবং রাজ্যজুড়ে তাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করি। আমি চাচ্ছিলাম যেন তারা আমাদেরকে দেখে। একইসঙ্গে আমি চাচ্ছিলাম আমার টিম যেন তাদের দেখে। যাতে করে আমরা যখন ব্যাক নির্বাহীদের সঙ্গে সম্মেলন কক্ষে বসবো তখন আমার সহকর্মীরা মনে রাখতে পারে আমরা আসলে কাদের প্রতিনিধিত্ব করছি। কোনো একটি আলোচনার মধ্যে আমি এমন একজন মানুষের সঙ্গে কথা বলছিলাম যার ব্যাংকের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল। যার ছোট বাচ্চা পাশেই খেলছিল। এক পর্যায়ে সে ওঠে এসে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করছিল ‘আন্ডার ওয়াটার’ কি? আমি তার চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছিলাম। সে ভাবছিল তার বাবা পানিতে ডুবে যাচ্ছে। এটা ছিল গভীরভাবে চিন্তা করার মতো বিষয়। যদিও বাস্তবে অনেক মানুষ আসলেই ডুবে গিয়েছিল। অনেকেই হাবুডুবু খাচ্ছিল এবং প্রত্যেক দিনই একের পর এক মানুষ পানিতে পড়ে যাচ্ছিল।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর