× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মির্জা কাদের মিথ্যা বলেছেন?

মত-মতান্তর

শামীমুল হক
৭ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র মির্জা আবদুল কাদেরের বক্তব্য এখন ভাইরাল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে। প্রশ্ন হলো তিনি কি মিথ্যা বলেছেন? এ দেশে সাহস করে সত্যি কথা বলার মানুষ খুব কমই আছে । এ কারণেই তার বক্তব্য দৃষ্টি কেড়েছে সবার। আসন্ন  বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীও তিনি। তার বক্তব্য নিয়ে ঝড় বইছে সর্বত্র। তিনি নানা অভিযোগের পাশাপাশি বলেছেন আমি সত্যি বলেই যাব। দল থেকে বহিস্কার হলেও বঙ্গবন্ধুর কথা বলে যাব।
শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা বলে যাব। তাকে হত্যা করার জন্য অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ এনেছেন। তার এ বক্তব্যের জন্য মানুষের কাছে তিনি নন্দিত হচ্ছেন। দেশের মানুষের অন্তরে তিনি নিজেকে স্থান করে নিয়েছেন।  তিনি আর কি বলেছেন? মির্জা কাদের জনতার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘শুনেন দুঃখের সহিত বলছি। আমাদের নোয়াখালীকে বলে বৃহত্তর নোয়াখালী। কিছু চামচা কয়, অমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপি’র দুর্গ ভেঙেছি। ফেনীতে কয়, অমুক নেতা। নোয়াখালীতে কয়, অমুক নেতা। লক্ষ্মীপুরে কয় অমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপি’র দুর্গ ভাঙছি। তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি’র দুর্গ ভেঙেছে? উত্তর আসে, না। এ সময় তিনি বলেন, তিন চারটা সংসদীয় এলাকা ছাড়া বৃহত্তর নোয়াখালীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের এমপি’রা দরজা খুঁজে পাবেন না। দরজা, দরজা। আর এটাই হচ্ছে সত্য কথা। আমি সাহস করে সত্যি কথা বলি। ফের জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটা কি মিথ্যা। জনতা জবাব দেন, না। আবদুল কাদের মির্জা বলেন, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কজন এমপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের জনপ্রিয়তা বাড়েনি। আপনারা ডেইলি ভোট কমান। শয়তানি থামান। নোংরা ছেলেদের পালেন। গুণ্ডা পালেন। সন্ত্রাসী পালেন। এদের নিয়ে বড় বড় মিছিল করেন। টাকা দিলে ঢাকা শহরে বস্তির লোকের অভাব আছে নাকি? বিরাট মিছিল করা যায়। তিনি বলেন, নোয়াখালীর সাংবাদিকরা লেখে না। এত জঘন্য ঘটনা আজ নোয়াখালীতে ঘটছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালীতে ওবায়দুল কাদের, মওদুদ সাহেব আর আবু নাছের ছাড়া কোনো নেতা সৃষ্টি হয়নি। ওনারা তিনজন অসুস্থ। ওনারা মারা গেলে কার নামটা বেচুম? একটা লোক দেখান। আছেনি? উপস্থিত জনতা উচ্চস্বরে বলেন, নাই। তিনি বলেন, এখন প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তারা হলো নেতা। টেন্ডারবাজি করে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে তারা হচ্ছে নেতা। পুলিশে চাকরি দিয়ে যারা পাঁচ লাখ টাকা নেয় তারা হচ্ছে নেতা। গরিব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়নের চাকরি দিয়ে যারা তিন লাখ টাকা নেন তারা হচ্ছে নেতা। যারা ‘ওবায়দুল কাদেরের মতো নেতার গালে গালে জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দেয় তারা হচ্ছে নেতা।  মির্জা কাদের বাস্তবচিত্র তুলে ধরে নিজের দলকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তিনি সমাজের অন্য মানুষদের থেকে ব্যতিক্রম। স্বাভাবিক যা দেখা যায়, তা হলো মানুষ সব দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে দেন। কখনো কখনো চাপিয়ে দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। মির্জা কাদের তা করেননি। তিনি উচ্চস্বরে নিজ দলের নেতাদের দোষত্রুটি তুলে ধরেছেন। আর এটা বলে তিনি নিজ দলকেই বাঁচাতে চেষ্টা করেছেন।
এ মুহূর্তে একটি গল্প মনে পড়ছে। দুই বন্ধু প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল। একে তো বৃষ্টি, তার ওপর রাত। কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ এক বন্ধু পা পিছলে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আকাশে বিজলি চমকায়। এ সময় পড়ে যাওয়া বন্ধু অপর বন্ধুকে বলছে, ‘দেখছোস আল্লায় আমারে ফালাইছে তো ফালাইছে, আবার লাইট মাইরা দেখতাছে, ঠিকঠাক মতো পড়ছি কিনা। আমাদের সমাজের অবস্থাও হয়েছে এখন তাই। সর্বত্র চলছে অন্যের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা। এদেশে হ্যাঁ-কে না বলানো যায় নিমিষে। আবার না-কে হ্যাঁ বলানো যায় নিমিষে। মির্জা কাদের এমন এক সময় কথাগুলো বললেন, যখন দেশের মানুষ চাইছিলেন কিছু কিছু নেতার চিত্র সামনে আসুক। কিছু কিছু এলাকার চিত্র দেশবাসী জানুক। মির্জা কাদের সত্যিটা তুলে ধরে যেমন তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তেমনি তার দলকেও ভালোবাসার প্রমাণ দেখিয়েছেন। দলকে বাঁচানোর জন্যই বলেছেন- কিছু নেতার কারণে ডেইলি ভোট কমছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর