গায়ের রং মাজা মাজা। বলিষ্ঠ গড়ন, মাথায় ফেজ টুপি। গলায় সাদা কালো চাদর মাফলারের মত জড়ানো। বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ এর মধ্যে। তিনি ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। মুসলমান যুব সমাজের ফায়ারব্রান্ড নেতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি পরিচিত ভাইজান নামে। হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙ্গিপাড়ার গ্রাম ফুরফুরা।
১৩৭৫ সালে মোহাম্মদ কিবলিশ এখানে একটি মসজিদ তৈরি করেন। বাঙালি মুসলমানদের কাছে এই ফুরফুরার মাজার ফুরফুরা দরবার সাহেব নামেই পরিচিত। এখানকারই পীরজাদা বংশের সন্তান আব্বাস সিদ্দিকী। বললেন, আমি কিন্তু শুধু মুসলমানদের নেতা নই, দলিত, আদিবাসী, গরিব মানুষদেরও নেতা। ওদের মুখে ভাষা জোগানোটাই আমার নীতি। আব্বাস সিদ্দিকী মনে করেন, বাংলার ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম। অথচ, কংগ্রেস তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও নিরাশ করেছে। বামেরা মুখে অনেক কথা বলেও এদের জন্যে কিছু করেনি। ভরসা ছিলেন দিদি। তা তিনি গত দশ বছরে হিন্দু - মুসলমান বিভাজন ছাড়া আর কিছু করেননি।
তাই, এবার আব্বাস সিদ্দিকী নিজে দল গড়ে ভোটে লড়বেন। বললেন, এবারের ভোটে অন্তত ৪৪ আসনে প্রার্থী দেবই। আমার ভোটারদের বলেছি, কুকুর কামড়াতে আসলে পাল্টা কুকুরকে কামড় দেবেন না। যদি অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে লাশ পড়ে, পড়ুক, আমরা ভয় পাইনা।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু, আসাউদ্দীন ওয়াইসির দল এ আই এম আই এম কিংবা মিমের সঙ্গে জোট বাঁধছেন। মিমকে লোকে বিজেপির বি টিম বলে। আপনি কি বিজেপির বি টিম হয়ে কাজ করবেন? আব্বাস সিদ্দিকীর সাফ কথা, বিজেপি দেশের মানুষের জন্যে কিছু করেনি। যারা মানুষের জন্যে কাজ করে না, আব্বাস সিদ্দিকী তাদের সমর্থন করেনা। সি এ এ, এন আর সি গরিবদের সর্বনাশ করবে। তাই, বিজেপিকে সমর্থন করার প্রশ্নই নেই। মুসলিম, দলিত, আদিবাসীদের স্বার্থরক্ষায় আমি লড়বো। ওয়েইসি সাহেব এসেছিলেন. মানুষের কল্যানে ফ্রন্টে তিনি যোগ দেবেন। তাকে স্বাগত জানিয়েছি। কিন্তু, পীরজাদাদের অনেকেই কি আপনার এই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসার বিরোধী নয়, বিশেষ করে আপনার চাচা মমতাপন্থী তোহা সিদ্দিকী? আব্বাস সিদ্দিকী বললেন, প্রত্যেক পীরজাদাই আমার নমস্য। নিজেদের চিন্তা ভাবনা একান্ত ভাবে তাঁদের। আমার চিন্তা ভাবনা আমার. আমি মানুষের জন্যে রাজনীতি করছি, করে যাবো আব্বাস সিদ্দিকীর কণ্ঠে প্রত্যয়ের সুর।