চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আধুনিক হাসপাতাল (মেটার্নিটি ইউনিট) নামক ক্লিনিক চিকিৎসাসেবার নামে রোগীদের নানা হয়রানি ও ধোঁকা দিয়ে চলেছে। এতে ভোগান্তির শিকার হন হাজারো রোগী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ নেই বলেই রোগীদের সঙ্গে এমন আচরণ করছেন বলে স্থানীয়দের মন্তব্য। ভুল চিকিৎসা, ভুল রিপোর্টে কষ্ট পাচ্ছেন রোগীরা।
ভুক্তভোগীর লোকমান সওদাগর মানবজমিনকে বলেন, কয়েকদিন আগে আমার শরীর ডায়াবেটিস ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় আধুনিক হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্টে জানান, আপনার ডায়াবেটিস সুগার ২২:০৪ এবং জ্বর ১০৪ ডিগ্রি। আপনাকে এই হসপাতালে রাখা যাবে না। শহরে বড় একটা হাসপাতালে চলে যান।
না হয় আপনাকে বাঁচানো সম্ভব না। পরে আমি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হসপিটালে একই তারিখে এক ঘণ্টা পর চিকিৎসাসেবা নিই। সেখানে আমার ডায়াবেটিস সুগার ১১:০২ এবং জ্বর ১০২ ডিগ্রি। কিন্তু আধুনিক হাসপাতালের এমন রিপোর্টে আমি হতবাক!
আরেক ভুক্তভোগী মুহাম্মদ মুছা বিএসসি মানবজমিনকে বলেন, আধুনিক হাসপাতাল নামক কসাইখানায় দীর্ঘদিন আমার স্ত্রীকে (গাইনি) চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলাম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে নানা ধরনের হয়রানি ও ভয়-ভীতি দিয়ে আসছিল। আমার স্ত্রীর বাচ্চা ডেলিভারির জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করিয়ে ছিলাম। রিপোর্টে আসছে- বাচ্চার কন্ডিশন ভালো না! বাচ্চার ওজন কম, বাচ্চা নড়াচড়া করছে না, বাচ্চার মাকে সিজার করতে হবে! না হয় বাচ্চা ও বাচ্চার মা, যে কোন একজন মারা যেতে পারে। আমাকে বলে যে লিখিত জিম্মানামা স্বাক্ষর দিতে হবে। যাতে কেউ মারা গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে। এমনটা বলার পর আমি হতবাক নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মুহূর্তেই আমি ওই হাসপাতাল থেকে আমার স্ত্রীকে বের করে হাটহাজারী মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করায়। আলহামদুলিল্লাহ! ভর্তি করানোর এক ঘণ্টা পর আমার পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে। ডেলিভারি নরমাল হয়েছে, বাচ্চা ও বাচ্চার মা দু’জনই সুস্থ আছেন। কিন্তু আধুনিক হাসপাতালে রোগীকে সেবার নামে নানা হয়রানি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের প্রশ্ন থেকে যায়! হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন মানবজমিনকে জানান, বাসস্ট্যান্ডে সড়ক ও জনপদের জায়গায় গড়ে ওঠা আধুনিক হাসপাতালে বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স ও কর সনদপত্র নেই। তারপরও মানুষ কেন যে চিকিৎসাসেবা নিতে সেখানে যায় আমার সঠিক জানা নেই।