কম্পিউটারের ত্রুটির কারণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ রেকর্ড মুছে যাবার ফলে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছেন বৃটেনের হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল। সুত্র মতে, গুরুতর অপরাধের রেকর্ড সমূহ দুর্ঘটনাক্রমে মুছে ফেলা হয়েছে। এতে অপরাধীরা ধরা না পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
পাবলিক প্রসিকিউশনের প্রাক্তন পরিচালক বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমার এবিষয়ে বেশ সোচ্চার ভূমিকা নিয়েছেন। তিনি হারিয়ে যাওয়া ফাইলের গুরুত্বারোপ করে এ বিষয়ে সরাসরি তদন্ত দাবি করছেন। তিনি হোম সেক্রেটারিকে এর দায়-দায়িত্ব নেয়ার জন্য বলেছেন। কেয়ার স্টারমার সোমবার সংসদে এ সম্পর্কে একটি বিবৃতি দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেছেন, হোম সেক্রেটারিকে এ বিষয়ে পুরো তথ্য প্রদান এবং সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে।
জুনিয়র হোম অফিস এন্ড মিনিস্ট্রি অব জাস্টিস মিনিস্টার কিট ম্যালথহাউস শুক্রবার এক বিবৃতিতে মানবীয় ত্রুটিকে দায়ী করে বলেছেন, তথ্য সমূহ উদ্ধার প্রচেষ্টা চলছে। পুরো ইস্যুটি মূল্যায়নের জন্য জরুরি তদন্ত অব্যাহত রাখতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সেডো হোম সেক্রেটারি নিক থমাস-সাইমন্ডস মিডিয়াকে বলেছেন, অপরাধমূলক আচরণ সম্পর্কিত প্রচুর পরিমাণ তথ্য হারিয়ে যাওয়া একটি গুরুতর ঘটনা। এক্ষেত্রে হোম সেক্রেটারিকে এই বিষয়ে আঁকড়ে ধরতে হবে এবং ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য ডেটা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা এবং কীভাবে এটি আবার ঘটতে না পরে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে প্রীতি প্যাটেল জানিয়েছেন, হোম অফিসের ইঞ্জিনিয়াররা হারিয়ে যাওয়া তথ্য পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
আমি তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা আপডেট তথ্য সরবরাহ করব।
পুলিশ ন্যাশনাল কম্পিউটার (পিএনসি) এর নাভিদ মালিক শুক্রবার জাতীয় পুলিশ প্রধানগণের কাউন্সিলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ডেটা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২১,৭১০টি বিষয় সম্পর্কিত প্রায় ২৬,০০০ ডিএনএ রেকর্ড ভুলভাবে মুছে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে অনির্দিষ্টকাল রাখার জন্য চিহ্নিত রেকর্ডগুলিও রয়েছে।
প্রযুক্তিবিদরা কয়েক হাজার ফিঙ্গারপ্রিন্ট রেকর্ড পুনরুদ্ধার করতেও সচেষ্ট রয়েছেন। মালিকের চিঠিতে বলা হয়েছে ৩০,০০০ ফিঙ্গারপ্রিন্ট রেকর্ড এবং ৬০০টি বিষয়ের রেকর্ড সম্ভবত ভুলে মুছে ফেলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রীতি প্যাটেল বৃটেনের রাজনীতিতে একেবারে নতুন মুখ। গুজরাটের বাসিন্দা প্রীতির পরিবার ষাটের দশকে বৃটেনে পাড়ি জমান। এখানেই প্রীতির জন্ম হয়। উচ্চতর পড়ালেখা শেষে ২০১০ সালে তিনি কনজারভেটিভ পার্টিতে যোগদেন এবং প্রথম বারেই পার্লামেন্ট মেম্বার নির্বাচিত হন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের বেশ কাছের মানুষ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। বরিস জনসন তাকে হোম সেক্রেটারি নিযুক্ত করেন।