নোয়াখালীর হাতিয়ায় গৃহবধূর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে পল্লী চিকিৎসককে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের মোল্লা গ্রামের জিহাদ (৩০), ফারুক (৩০), নবীর উদ্দিন ওরফে হোন্ডা নবীর (৩২), আলমগীর হোসেন (৪০) ও আবু তাহের (২৭)। গতকাল দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গত ১লা জানুয়ারি ওই এলাকার কিছু বখাটে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ও এক গৃহবধূকে মারধর করে। তাদের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে পল্লী চিকিৎসককে নির্যাতনের ঘটনাটি তারা মোবাইলে ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘পরে নির্যাতনের শিকার ওই পল্লী চিকিৎসক বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় ১১ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে।’ এদিকে ঘটনার ১৬ দিন পর নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রোববার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন। তিনি ভুক্তভোগীসহ সবার সঙ্গে কথা বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই নারীকে বিবস্ত্র করা হয়নি।
ঘটনাস্থল মামলায় যেখানে দেখানো হয়েছে সেটিও সঠিক নয়। এছাড়া সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া ভিডিওটি ঘটনাস্থলে নির্যাতনের শিকার একজন পুরুষের। মূলত জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা।’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনায় তদন্ত শেষে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। অন্য আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।’ এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুরুষকে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষের ভেতর ঢুকানো হচ্ছে। কক্ষের ভেতর থেকে এক নারীর কান্নাকাটি ও চিৎকার শোনা যাচ্ছে। এছাড়া একজন নারী ও এক পুরুষকে সুপারি গাছে বেঁধে রাখার একটি ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর চানন্দি ইউনিয়নের ৩২ বছর বয়সী এক নারী গত ৫ জানুয়ারি জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, গত ১লা জানুয়ারি রাতে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তার ওপর নির্যাতন চালায়।