× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কেমন হবে বাইডেনের কূটনীতি, পররাষ্ট্রনীতি ও বৈশ্বিক সম্পর্ক!

বিশ্বজমিন

মোহাম্মদ আবুল হোসেন
(৩ বছর আগে) জানুয়ারি ১৯, ২০২১, মঙ্গলবার, ২:০২ অপরাহ্ন

কূটনীতি এবং বৈশ্বিক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে ভিন্ন এক অবস্থানে নিয়ে যাবেন আসন্ন জো বাইডেন প্রশাসন। তিনি বুধবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার দিন থেকেই এই কার্যক্রম শুরু করবেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বহুপক্ষীয় বিষয়ের প্রতি সমর্থন করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যিক জোট পুনঃস্থাপনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তি ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে সম্পর্কিত করবেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম থেকেই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি হোয়াইট হাউজে প্রথমদিন থেকেই বহুপক্ষীয় বিষয় পরিহার করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রকে বহুপক্ষীয় অনেক চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ এবং ইরানের পরমাণু চুক্তি।
ট্রাম্পের এসব নীতির ঠিক উল্টো অবস্থানে যাবেন বাইডেন। বিগত রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেটিক প্রশাসনের সময়ে হোয়াইট হাউজে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে দায়িত্ব পালন করেছেন হিলারি মান লেভেরেত। তিনি রাজনৈতিক ঝুঁকি বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্রাটেগা’র প্রধান এখন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প যে পরারাষ্ট্রনীতি নিয়েছিলেন তা ছিল অনেকটা সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের মতো। হিলারি মান লেভেরেত বলেছেন, এই দুই নেতার মধ্যে একটি বিষয় অভিন্ন ছিল। তা হলো তারা মনে করতেন তাদের দেশ অন্য কারো বন্ধু হতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের শুধু স্বার্থ আছে। তাদের বন্ধুর প্রয়োজন নেই। আমার মনে হয়, এসব বিষয়ে ট্রাম্পের যথেষ্ট অনুভূতি ছিল যে, তিনি নিক্সনের পথ অনুসরণ করতে পারেন। তিনি হতে পারেন কঠোরভাবে বাস্তববাদী। নিক্সন যেভাবে চীনের প্রতি উন্মুক্ত হয়েছিলেন তিনি সেই গুরুত্বপূর্ণ পথে যেতে পারতেন।
গত চার বছর ক্ষমতায় থেকে ট্রাম্প নিজেকে উপস্থাপন করেছেন একজন ডিলমেকার-ইন-চিফ বা চুক্তি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে। তিনি আন্তর্জাতিক একজন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার। তাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদা বা অবস্থানের দিকে তাকাননি। তিনি এসব নিয়ে ভীত ছিলেন না। দিনশেষে তার বুদ্ধির গভীরতা থাক বা না থাক, তার চারপাশে শেষ সময়ে যেসব মানুষের থাকার কথা ছিল, তারা কেউই নেই। অথবা তিনি এ বিষয়ে লক্ষ্য নির্ধারণে তার দৃষ্টি রাখেননি। তিনি আসলে এসবের পাত্তাই দেননি।
সম্পর্কের পুনর্গঠন: পক্ষান্তরে জো বাইডেন পশ্চিম ইউরোপ সহ অনেক দেশের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার আশা করছেন। বিশেষ করে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের সঙ্গে এই সম্পর্ক গাঢ় করতে চান তিনি। বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় মারকেলের সঙ্গে ছিল তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কিন্তু ট্রাম্পের সময়ে এই মারকেলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছিল। তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে জো বাইডেনের সম্পর্ক কেমন হবে তা অনিশ্চিত এখনও। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বৃটেনকে প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণে বরিস জনসনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প। সম্ভবত ঘটনাটা সেখানেই। ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটিতে পদস্থ ডেমোক্রেট ছিলেন বাইডেন। তিনি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে তিনি তার জীবনের প্রায় ৫ দশক রাজনীতিতে কাটিয়েছেন। এ সময়ে তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেক ভারি হয়েছে। বলেছেন, যখন প্রয়োজন হবে তখন তিনি সরাসরি বা মুখোমুখি কথা বলতে ভীত হবেন না।
জো বাইডেনের সাবেক বস, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার এসব নীতির প্রশংসা করেছেন। ইতিমধ্যে জো বাইডেন তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাচ্ছেন ঝানু সব কূটনীতিককে। এক্ষেত্রে তিনি কালবিলম্ব করেননি। এক্ষেত্রে তিনি ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে সমঝোতাকারী হিসেবে একজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন, যিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন যারা, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জো বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, ব্রাজিলের উগ্রডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জায়ের বোলসনারো, মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার। এদের সবার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বিশেষ করে, এই সম্পর্কের কারণে সৌদি আরবের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে নৃশংস হত্যায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্স জড়িত বলে অভিযোগ আছে। ২০১৯ সালে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে মিশরের সাবেক সেনাপ্রধান ও বর্তমানের স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি’কে ট্রাম্প আখ্যায়িত করেছিলেন ‘ফেভারিট ডিক্টেটর’ হিসেবে। ফলে এসব ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেবেন বাইডেন- এটা প্রায় নিশ্চিত। এর অর্থ এই নয় যে, তিনি স্বৈরতান্ত্রিক মনমানসিকতার নেতাদের সঙ্গে কাজ করবেন না। এক্ষেত্রে লক্ষ্য হবে আরো বিস্তৃত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর