৫ই জুলাই ২০১৯, পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। এরপরই খরস্রোতা নদীতে বিশ্বসেরা টাইগার অলরাউন্ডার। দেশের ক্রিকেটে তার নেতৃত্বে বিদ্রোহ। এর পরই আইসিসির নিষেধাজ্ঞা। সেই অপরাধে এক বছর মাঠের বাইরে। গেল বছর ২৯শে অক্টোবর মুক্তি মিলেছে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠে ফেরা হয়নি। ১৫ মাস পর ফের আজ বাংলাদেশের জার্সিতে ব্যাট-বল হাতে তুলে নিবেন সাকিব।
নিজের ১৫ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এ যেন তার জন্য অন্যরকম এক ফেরা। তার সামনে এখন দলের সতীর্থ-বিশ্বস্ততা আদায়, আলরাউন্ডার হিসেবে আস্থা অর্জন, শেষ থেকে শুরু করা, ২০২৩ বিশ্বকাপ মিশন, এমনকি নিজের প্রিয় ৩ নম্বর পজিশন ছেড়ে ব্যাটিং করা। এই সবই যেন তার মাঠে ফেরাকে করে তুলেছে ‘অন্যরকম’। তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ থেকে মাঠে লড়াই শুরু করবে সাকিব। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কড়া নজরদারিতেও থাকবেন তিনি। তাকে নিয়ে কোচ বলেছেন, ‘অনেক দিন ধরে সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। চার নম্বরে খেললে সে কিছুটা স্বস্তির জায়গা পাবে। আমরা জানি, সে বিশ্বমানের খেলোয়াড়। এই ব্যাটিং লাইন আপ ভবিষ্যতের কোনো সুর বেঁধে দেবে না। বিশ্বকাপের জন্য এখনো অনেক পথ বাকি। ব্যাটিং লাইনআপ ঠিক করার আগে আমাদের অনেক বিকল্প নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।’ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ৮ ইনিংসে ৮৬.৫৭ গড়ে ২ সেঞ্চুরি ও ৫
ফিফটিতে করেছেন ৬০৬ রান। দেশের হয়ে নিজের সবশেষ ওয়ানডে আসরটা তিনি শেষ করেছেন দুনিয়া কাঁপিয়ে। এবার সেই শেষ থেকেই শুরু করতে হবে তাকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার সুযোগ না পেলেও গেল বছর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি মাঠে নেমেছিলেন। জেমকন খুলনার হয়ে ৯টি ম্যাচ খেলেন সাকিব। একটিতেও হাসেনি তার ব্যাট। ব্যাট-বল হাতে ৯ ম্যাচে মাত্র ১১০ রান করেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। শিকার ছিল মাত্র ৬ উইকেট। তাই নড়বড়ে এই পারফরম্যান্সের পর তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুনভাবে প্রমাণও করতে হবে। তাও তার প্রিয় পজিশন ৩-এ নয়। যেখানে তিনি ব্যাট হাতে করেছেন-২৩ ওয়ানডেতে ২টি সেঞ্চুরি ও ১১টি ফিফটিতে ১ হাজার ১৭৭ রান। তবে সাকিব বলে কথা। ২০৬ ওয়ানডে খেলা সাকিব নিজের সব অভিজ্ঞতা হয়তো উজাড় করে দিবেন। সাকিব চারে খেলাতে, ৩ নম্বর পজিশনে শান্ত ব্যাট করবেন। তাই দলে পজিশনটা ওলট-পালট হচ্ছে। অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করবে লিটন দাস। পাঁচে মুশফিকুর রহীম ছয়ে মাহমুদুুল্লাহ রিয়াদ। এছাড়াও ৭-এ খেলবেন সৌম্য সরকার, এমনটাই জানিয়েছেন কোচ ও অধিনায়ক।
এছাড়াও দলে তিন পেসারের সঙ্গে যোগ হবে আরো একজন বাড়তি স্পিনার। সেই হিসেবে পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের থাকা প্রায় নিশ্চিত। তৃতীয় পেসার হিসেবে কে! ধারণা করা হচ্ছে তিন বছর পর দলে সুযোগ হতে পারে তাসকিন আহমেদের। তা-না হলে অভিষেক হতে পারে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামের। আর সাকিবের জুটি হিসেবে অভিষেক হতে পারে অফ স্পিনার শেখ মেহদী হাসানের।