× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শপথ নিয়ে ক্ষত মেরামতের ডাক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের /এটা গণতন্ত্রের দিন

প্রথম পাতা

অনিম আরাফাত, ঢাকা, হেলাল উদ্দীন রানা, যুক্তরাষ্ট্র
২১ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার

আশা আর ইতিহাসের দিনে গণতন্ত্রের জয়গান শোনালেন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আর বাইডেন জুনিয়র। ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর তার দৃপ্ত উচ্চারণ, এটি গণতন্ত্রের দিন, এটি আমেরিকার দিন। বাইডেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে, চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। আজকে আমরা শুধু একজন প্রার্থীর জয় উদযাপন করছি না, আমরা আজকে একটি অর্জনকে উদযাপন করছি। এই অর্জন 
গণতন্ত্রের। আমরা দেখতে পেয়েছি গণতন্ত্র কত মূল্যবান। গণতন্ত্র ভঙ্গুরও হতে পারে। তবে আমরা দেখেছি, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
নতুন প্রেসিডেন্টকে শপথ পাঠ করান যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস।
এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। জো বাইডেন দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট। জো বাইডেনের পাশাপাশি নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন কমালা হ্যারিস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন। এছাড়া, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও প্রথম দক্ষিণ এশীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এই শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অবশেষে ডনাল্ড ট্রাম্পের বহুল আলোচিত শাসনের অবসান হলো। পালাবদল হলো সিংহাসনে। এবার প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানটি ছিল একেবারেই অন্যরকম। এমনিতে করোনার কারণে চারদিকে সতর্কতা। ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব পুরো পরিস্থিতিকে একেবারেই বদলে দেয়। এমন আরো ঘটনার আশঙ্কায় পুরো দেশকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়। ওয়াশিংটন ডিসিকে রীতিমতো অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। এরই মধ্যে গতকাল অভিষেক অনুষ্ঠানে লোকজনের উপস্থিতি ছিল নিয়ন্ত্রিত। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছিলেন না বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। যদিও বাইডেনের জন্য একটি চিঠি রেখে গেছেন তিনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান জয় ঘোষণা করলো গণতন্ত্রের।
গণতন্ত্র মূল্যবান: বাইডেন
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই জো বাইডেন বলেন, হেল্প মি গড। ঈশ্বর আমাকে সাহায্য করুন। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণে বলেন, আমরা আবার জানলাম গণতন্ত্র মূল্যবান। গণতন্ত্র অবশ্যই আসবে। জনগণের কন্ঠস্বরকে শোনা হয়েছে। তাদের ইচ্ছার কথা শোনা হয়েছে। গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। ক্ষমতায় বসে তার কাজ কী হবে তা উল্লেখ করে জো বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখন অনেক কিছু মেরামত করতে হবে, অনেক কিছু পুনরুদ্ধার করতে হবে, অনেক কিছুর নিরাময় করতে হবে, অনেক কিছু তৈরি করতে হবে এবং অনেক কিছু অর্জন করতে হবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেন বলেন, প্রতি একশ বছরে এরকম একটি ভাইরাস দেশকে স্তব্ধ করে দেয়। এটি এক বছরে এতো মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত মার্কিনিদের সংখ্যার সমান।
বক্তব্যে তিনি তার পূর্বসূরীদের ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে বিল ক্লিনটন, জর্জ বুশ এবং বারাক ওবামা উপস্থিত ছিলেন। বাইডেন জানান, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের (৯৬) সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তাকে তার সার্ভিসের জন্য স্যালুট জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেয়া প্রথম বক্তব্যে জো বাইডেন আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা দেশের ভিতর সন্ত্রাসকে পরাজিত করবো। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। ন্যায়বিচারের স্বপ্ন আর অধরা থাকবে না। আমরা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ এবং আভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করবো। বক্তব্যে তিক্ততা এবং চরমপন্থা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান জো বাইডেন। একইসঙ্গে আহবান জানান পারসপরিক শ্রদ্ধাবোধ বৃদ্ধিরও। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মহত্মের জন্য ঐক্য প্রয়োজন। চিৎকার বন্ধ করে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান তিনি। বাইডেন বলেন, ঐক্য ছাড়া শান্তি আসে না। আমরা বিভিন্ন জোটের সঙ্গে আবার যুক্ত হবো। বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হবো। বক্তব্যে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের প্রশংসা করেন। বলেন, ১০৮ বছর আগের যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী নারীদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল। আর আজ আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের শপথ অনুষ্ঠান দেখলাম। তাই আমাকে বলবেন না, কোনো কিছু পরিবর্তন করা যায় না।
বাইডেন বলেন, যে শক্তি আমাদের বিভক্ত করেছে তা অত্যন্ত গভীর এবং বাস্তব। কিন্তু এটি নতুন কিছু নয়। শত শত বছর ধরে এই যুদ্ধ চলছে। কখনই আমাদের জয় নিশ্চিত ছিল না। তবে ভালো দেবদূতরা সবসময় জয়ী হয়েছে। এদেশের ইতিহাস ও বিশ্বাস আমাদের ঐক্যের পথ দেখিয়েছে।
শপথ অনুষ্ঠান
বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ১০টার সময় শুরু হয় শপথ অনুষ্ঠান। করতালির মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফার্স্টলেডি জিল বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে। শপথ অনুষ্ঠানে বাইডেনের পরনে ছিল নেভি ব্লু রংয়ের স্যুট ও ওভারকোট। এর ডিজাইন করেছেন রাফ লরেন। অনুষ্ঠানে বাইডেন বক্তব্য দেয়ার আগ পর্যন্ত তার পাশাপাশিই দেখা গেছে ফার্স্টলেডি জিল বাইডেনকে। এ সময়ে তার পরনে ছিল গাঢ় নীল রংয়ের পোশাক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণ দেন মার্কিন সিনেটর এমি ক্লুবুচার। ১০ টা ৪০ এর দিকে শপথ গ্রহণ করেন কমালা হ্যারিস। দু’সপ্তাহ পূর্বে ক্যাপিটল হিল হামলার প্রেক্ষিতে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আয়োজিত হয় বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান।

"দেলাওয়ার হৃদয়ে লেখা থাকবে"
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার জন্য সপরিবারে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি’তে পৌঁছানোর পূর্বেই নিজের রাজ্য দেলাওয়ার নিউ ক্যাসেল শহরে আবেগঘন বক্তৃতা দেন জো বাইডেন। বক্তৃতায় বাইডেন বলেন, দেলাওয়ার রাজ্যের এক গর্বিত সন্তান হিসেবেই সব সময় আমার পরিচিতি থাকবে। বাইডেন বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাকে বারবার চোখ মুছতে দেখা যায়। তিনি নিজের আবেগের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ক্যান্সারে মারা যাওয়া তার অকালপ্রয়াত ছেলে বিউ বাইডেনকে স্মরণ করে বলেন, ধারণা ছিল বিউ একদিন প্রেসিডেন্ট হবে। জো বাইডেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি যখন মারা যাবো, দেলাওয়ার আমার হৃদয়ে লেখা থাকবে।
কালো কোট পরে শীতের সকালে দেয়া বক্তৃতায় স্মরণ করেন তার বাবা-মা চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থার সময় দেলাওয়ারে এসে বসতি গড়েন। যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে রাজ্যের হয়ে ত্রিশ বছর দায়িত্ব পালনের আগে নিউ ক্যাসল এলাকা থেকে কাউন্সিলর হওয়ার কথা জো বাইডেন তার বক্তৃতায় স্মরণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আট বছর।
এসব ঘটনায় নিজের আপ্লুত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন- তার জীবনের ভালো ও খারাপ সময়ে দেলাওয়ার রাজ্যের লোকজন পাশে ছিল। এটি তার জীবনের চরম পাওয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন জনপ্রিয় ডেমোক্রেট দলের উদীয়মান রাজনৈতিক তারকা হিসেবে তার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। দেলাওয়ার রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে অল্পদিনেই মারা যান বিউ বাইডেন। এ কারণে সুযোগ থাকার পরও ২০১৬ সালের নির্বাচনে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে অস্বীকার করেছিলেন।
বাইডেন বলেন, এ রাজ্য আমাদের অনেক দিয়েছে। আমার মা-বাবার সবচেয়ে প্রয়োজনের সময় এ দেলাওয়ার রাজ্য তাদের থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, দেলাওয়ার নিজের প্রতি আস্থা রাখার সুযোগ করে দিয়েছে। আমাকে সিনেটে পাঠিয়েছে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য। এ রাজ্য আমাকে জিল বাইডেনকে খুঁজে পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এ রাজ্য আমার ছেলে বিউকে ভালোবাসা দেখিয়েছে।’ জো বাইডেনের এমন আবেগমাখা বক্তৃতার সময় উপস্থিত লোকজনকেও অশ্রুসিক্ত হতে দেখা যায়।

যেসব পরিবর্তন নিয়ে আসবেন বাইডেন
৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরই বেশকিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন জো বাইডেন। তার প্রচারণা শিবির প্রথম থেকেই এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল। যেসব পরিবর্তন আসতে পারে তা নিয়ে একটি আপডেট প্রকাশ করেছে সিএনএন। এতে করোনাভাইরাস মহামারি, অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নানা পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, বাইডেন প্রথম দিনেই মার্কিন নাগরিকদের ‘১০০ দিনের মাস্ক চ্যালেঞ্জ’-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। এরফলে পরবর্তী ১০০ দিন মার্কিনিদের মাস্ক পরার আহ্বান জানানো হবে। একইসঙ্গে তিনি স্বাক্ষর করবেন মাস্ক ম্যানডেটে। এর অধীনে সকল ফেডারেল ভবনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে। ডনাল্ড ট্রামপ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। বাইডেন এই প্রক্রিয়া বাতিল করবেন। নিজের ক্ষমতা বলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স কো-অর্ডিনেটর’ পদ সৃষ্টি করবেন। এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সমপর্কে সকল তথ্য প্রেসিডেন্ট সরাসরি হাতে পাবেন।
ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সমপন্ন হবে। তিনি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন যার ফলে মার্কিন এজেন্সিগুলো কার্বন নিঃসরণের মাত্রা পুনরায় নির্ধারণ করবে। একইসঙ্গে পরিবেশের জন্য হানিকর এমন সব নীতি তিনি বাতিল করবেন যা ট্রামপ সরকারের সময় চালু করা হয়েছিল।
জাতিগত বৈষম্যতা ও বর্ণবাদ রোধেও নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন বাইডেন। এর ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সিগুলোতে থাকা বর্র্ণবাদী নানা নীতি পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে। এতে যেসব সমস্যা বা সীমাবদ্ধতা পাওয়া যাবে সেটা সংশোধন করা হবে।

ট্রাম্পের বিদায়ী ভাষণ
বিদায়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে হোয়াইট হাউসেই ছিলেন ট্রামপ। তাকে দেখা যায়নি জনসম্মুখেও। স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে তিনি সর্বশেষ হোয়াইট হাউসের ব্লু-রুম থেকে ভিডিও ধারণ করেন। তার এই বিদায়ী ভাষণ প্রকাশিত হয় মঙ্গলবার বিকালে। এতে তিনি তার প্রশাসনের একাধিক অর্জন তুলে ধরেন। ধন্যবাদ জানান তার পরিবার, হোয়াউট হাউসের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রশাসন এবং দেশের জনগণের প্রতি। ট্রামপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আমার মেয়াদ শেষ করছি। এই সময়ে আমরা একসঙ্গে যা অর্জন করেছি তা অনেক গর্বের। নতুন প্রশাসনের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন ট্রামপ। বার্তায় তিনি বলেন, এ সপ্তাহে একটি নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে। নতুন প্রশাসন আমেরিকাকে নিরাপদ ও সমৃদ্ধ রাখবে এই প্রার্থনা করছি। আমার শুভকামনা রইল। মনে রাখতে হবে যে, মার্কিনিদের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে। তবে সবাই তাদের দেশকে সমৃদ্ধ দেখতে চায়। তবে শুভকামনায় তিনি জো বাইডেনের নাম উল্লেখ করেননি।
ভিডিও বার্তায় ক্যাপিটল হিল হামলার সমালোচনা করেন ট্রামপ। বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ক্যাপিটল আক্রমণের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। এ রকম রাজনৈতিক সহিংসতা আমাদের মূল্যবোধের ওপর আক্রমণ। এটি কখনই সহ্য করা যায় না। এরপরই নিজের সময়ের কিছু অর্জনের দিকে দৃষ্টিপাত করেন ট্রামপ। করোনাভাইরাসের একাধিক ভ্যাকসিন আবিষ্কারের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। বিদায়ী ভাষণে ট্রামপ বলেন, আমাদের এজেন্ডা ডান বা বাম সম্পর্কে ছিল না কিংবা রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাট নিয়ে ছিল না, এটি ছিল মার্কিনিদের ভালোর জন্য। আমরা ঘরে ঘরে আমেরিকান শক্তি পুনরুদ্ধার করেছি এবং বিদেশে আমেরিকান নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের সাহসী কূটনীতি এবং নীতিগত বাস্তবতার ফলস্বরূপ, আমরা মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি অর্জন করেছি।
ট্রামপ বলেন, আমি গর্বিত কারণ আমি নতুন কোনো যুদ্ধ শুরু করিনি। বুধবার দুপুরে আমি যখন নতুন প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমি জানাতে চাই যে, আন্দোলন আমরা শুরু করেছি তা কেবলমাত্র সূচনা হলো।

ট্রাম্পের ওয়াশিংটন ত্যাগ

শপথ অনুষ্ঠানের ৪ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে (১৩ জিএমটি) হোয়াইট হাউস ছাড়েন ডনাল্ড ট্রামপ। সেখান থেকে তিনি যান জয়েন্ট বেজ অ্যান্ড্রুজে। এর আগে হোয়াইট হাউস থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রামপ। বলেন, দায়িত্বে থাকার সময় তিনি অনেক কিছু অর্জন করেছেন। তিনি এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রামপ মার্কিন জনগণকে ভালোবাসেন। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সর্বশেষ ভাষণ প্রদান করেন। ভাষণের শেষদিকে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত সম্মানের। বাইডেনের নাম না নিয়েই তিনি নতুন মার্কিন প্রশাসনের সাফল্য কামনা করেন। ভাষণ শেষে ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন ট্রামপ। প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ সুবিধা হিসেবে এয়ারফোর্স ওয়ানের প্রেসিডেনশিয়াল ফ্লাইটে ট্রামপ যান ফ্লোরিডার পাম বিচে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর