ভারত সরকারের পাঠানো উপহারের ভ্যাকসিন দেশে এসেছে। আগামী সপ্তাহে সরকারের সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসছে। চলতি মাসের শেষের দিকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে শুরু হবে দেশব্যাপী ভ্যাকসিন নেয়া।
সরকারের তরফে বলা হচ্ছে ধাপে ধাপে দেশের সব নাগরিক টিকা পাবেন। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কিছু মানুষের ভ্যাকসিন নেয়া ঠিক হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভবতী নারী, যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে, মুমূর্ষু রোগী, ১৮ বছরের নিচে বয়সী, কিডনি এবং ক্যান্সারসহ জটিল রোগে আক্রান্তরা করোনার ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থ্যা এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিনকেই শতভাগ অনুমোদন দেয়নি।
এক্ষেত্রে যাদেরকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে তাদেরকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। কারণ, ভ্যাকসিনের অনেক গবেষণা এখনো বাকি। এটা এখনো গবেষণার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কারা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না? প্রথমত, গর্ভবতী নারী, ১৮ বছরের নিচে যারা আছেন, শিশুদের, যাদের এলার্জি, অ্যাজমাসহ সেনসেটিভ সমস্যা রয়েছে যেমন কিডনি-ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের প্রাথমিকভাবে এখন ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না। এতে ফুসফুস সংক্রমণের ঝুঁকি আছে। পক্ষান্তরে যাদের টিকা না নিলে মৃত্যুঝুঁকি আছে তাদেরকে দিতে হবে। ফ্রন্টলাইনার হেল্থ ওয়ার্কার চিকিৎসক, নার্স অর্থাৎ যারা স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছেন। এবং সিনিয়র সিটিজেন বা প্রবীণ ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দিতে হবে।
প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, প্রথমত যারা ১৮ বছরের নিচে, গর্ভবতী নারী এবং যারা বাচ্চাদের স্তন পান করিয়ে থাকেন তাদেরকে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না। এছাড়া যাদের সাধারণত বেশি মাত্রায় এলার্জি রয়েছে, হুপিংকাশি বা হাঁপানিজাতীয় রোগ রয়েছে। আরেকটি হলো যারা একেবারে মুমূর্ষু রোগী, ইতিমধ্যে শয্যাশায়ী তাদেরকে সাধারণত টিকা না দিতে বলা হয়েছে। কারণ, ভ্যাকসিনের যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে সেটা তারা সহ্য করতে পারবে না। এবং যাদের শরীরের ইমিউনিটি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) একেবারে বেশিমাত্রায় কম যেমন ক্যান্সার আক্রান্তদের কেমো ও রেডিও থেরাপি দেয়া হচ্ছে এই ধরনের রোগীদের না দেওয়াই ভালো। এতে ঝুঁকি রয়েছে।
আইইডিসিআর’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, যারা অসুস্থ, কোভিড এবং নন কোভিড উভয়ই। অর্থাৎ যারা শয্যাশায়ী। কোভিড রোগী যারা আইসোলেশনে আছে বাসায় কিংবা হাসপাতালে হোক তারা ভ্যাকসিন নিতে পারবে না। কোভিড আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ্য হওয়ার অন্তত তিন মাস পরে নিতে হবে। তাদেরকে বলা হচ্ছে তোমরা অন্যদেরকে সুযোগ দাও। আর যারা এখন হাসপাতালে আছেন যে কোনো রোগ নিয়েই হোক। এবং বাড়িতে শয্যাশায়ী যাদের খুবই দুর্বল স্বাস্থ্য, কেমোথেরাপির মতো ওষুধ নিচ্ছে। যেখানে প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই দুর্বল হয়ে যায় এই ধরনের রোগীরা করোনার ভ্যাকসিন নিতে পারবে না। এমনিতে অনেক দিন ধরে ব্লাড প্রেসারের ওষুধ বা ডায়াবেটিসের ওষুধ খাচ্ছেন যারা তাদের নিতে অসুবিধা নেই। আর নেয়া উচিত হবে না যাদের এলার্জি আছে। কোনো খাবার, ওষুধের প্রতি বা পরিবেশগত এলার্জি আছে তাদের টিকা না নেয়াই ভালো। তাদের মধ্যে ক্লিনিকালি ড্যাটা যদি দেখা যায় মোটামুটি নিরাপদ তখন নিতে পারবেন।
Mohammed Alam
২২ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার, ৪:৪১Every one must be following the instructions for your life and health and safety thanks