× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চীনের বিরুদ্ধে ভারতের ভ্যাকসিন কূটনীতি

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) জানুয়ারি ২২, ২০২১, শুক্রবার, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশকে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কয়েক লাখ টিকা প্রদান করবে ভারত। বৃহস্পতিবার এমনটি জানিয়েছে দেশটির কয়েকটি সরকারি সূত্র। ভারতের এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে প্রতিবেশী দেশগুলো। একইসঙ্গে অঞ্চলটিতে চীনের মোকাবেলায়ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে এই উদ্যোগ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট। ইতিমধ্যে বিনামূল্যে মালদ্বীপ, ভূটান, বাংলাদেশ ও নেপালকে টিকাটির লাখ লাখ ডোজ পাঠানো শুরু করেছে ভারত। শিগগিরই মিয়ানমার ও সিচেলিসেও বিনামূল্যে পৌঁছবে টিকাটির চালান। দেশগুলোকে উপহার হিসেবে করোনা টিকার ডোজ পাঠিয়ে বন্ধুত্ব গাঢ় করতে চাইছে ভারত।
নেপালের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রী হৃদেশ ত্রিপাঠি বলেন, অনুদান হিসেবে টিকা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা প্রকাশ করেছে ভারত সরকার।
এটা জনগণের পর্যায়ে ঘটেছে, কেননা জনগণই করোনায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে।
সীমান্ত বিরোধের কারণে নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে সম্প্রতি অবনমন ঘটেছে। এছাড়া, হিমালয়-ঘেঁষা দেশটিতে চীনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবও ভারতকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এমন সময় সেখানে করোনার টিকা পাঠিয়ে সম্পোর্কন্নয়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে ভারত।
অন্যদিকে, আগেই মহামারিতে নেপালকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল চীন। কিন্তু এখনো চীনকে সিনোফার্মের করোনা টিকা পাঠানোর অনুমোদন দেয়নি নেপাল সরকার।
এ বিষয়ে নেপালের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র সান্তোষ কে সি বলেন, আমরা অনুমোদন দেওয়ার আগে তাদের (চীন) আরো নথিপত্র ও তথ্য জমা দিতে বলেছি।

চীনা প্রতিদ্বদন্দ্বিতা
চীনের ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম বায়োটেকের তৈরি করোনা টিকার ১ লাখ ১০ হাজার ডোজ পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের।  কিন্তু বাংলাদেশ টিকাটি তৈরিতে অর্থায়ন করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় সেই চুক্তি পূর্ণতা পায়নি। পরবর্তীতে ভারতের কাছে টিকার জরুরি সরবরাহ চায় বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার উপহার হিসেবে ভারত থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার ২০ লাখ ডোজ পেয়েছে দেশটি।
বাংলাদেশের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ভারত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি প্রস্তুত করছে। আর এটাই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। টিকাটি স্বাভাবিক শীতল তাপমাত্রায় মজুদ ও পরিবহণ করা যাবে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে এই টিকা সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এদিকে, ভারতের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ পাকিস্তান বৃহস্পতিবার তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনকে টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। চীন জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষে বিনামূল্যে পাকিস্তানকে করোনা টিকার ৫ লাখ ডোজ দেবে তারা।
শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপের মতো দেশগুলোয় চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের অংশ হিসেবে, দেশগুলোয় রাস্তা, বন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করছে চীন সরকার। বিনিয়োগের আকারের তুলনায় চীনের সঙ্গে টক্কর দিতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত।
কিন্তু কূটনৈতিকদের মতে, এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি দেশ এখন করোনার টিকার জন্য মরিয়া। পর্যটননির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো ভারতের নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারকে টিকার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ার নতুন সুযোগ করে দিয়েছে।
ভারতের এক সরকারি সূত্র জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেশী দেশগুলোয় করোনা টিকার ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ২ কোটি ডোজ বিনামূল্যে প্রদানের পরিকল্পনা করছে ভারত।
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত রাজিব ভাটিয়া বলেন, এগুলো বেশ সুনিপুণভাবে সাজানো পদক্ষেপ। এসবের মধ্যে দিয়ে ভারতের 'প্রতিবেশী প্রথম' নীতিমালার বহিঃপ্রকাশ নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া, এগুলো বিজ্ঞান ও  ওষুধ জগতেও আমাদের সামর্থ্যের জানান দেয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর