খুলনা জেলার তেরখাদা থানার চাঞ্চল্যকর রবিউল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইসারত শেখ ওই হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সিআইডি খুলনার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহিদুল ইসলাম শাহীন দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস যাবৎ নিবিড় তদন্ত করে রবিউল হত্যার মূল হোতা কথিত কবিরাজ ইসারত শেখকে গ্রেপ্তারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার ভিকটিম মো. রবিউল মোল্লাকে ২০২০ সালের ২৩শে জুন দিবাগত রাতে রবিউলের বাড়িতে কথিত কবিরাজ রবিউলের পরিবারের সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে কবিরাজির নাম করে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ইসারত শেখ জানান, রবিউলের দ্বিতীয় স্ত্রী শামিমা খাতুনের সঙ্গে তার সম্পর্ক হওয়ার পর রবিউল এটা জেনে যায়। নিহত রবিউল এ নিয়ে স্ত্রী শামিমা খাতুনকে মারধর করেন এবং ইসারতকে হত্যার হুমকি দেন। এই কারণে তিনি রবিউলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সেই মোতাবেক রবিউলের প্রথম স্ত্রী বালিনা খাতুনকে ফোন করে নিজেকে কবিরাজ পরিচয় দিয়ে বলেন, তার কাছ থেকে তদবির নিয়ে রবিউল তার শ্যালক লিটু মোল্লার স্ত্রী শামিমাকে প্রেমে ফেলে বিয়ে করেছে। তার কাছ থেকে তদ্বির নিয়ে রবিউল তার ছোট ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে ফেলে পরের স্ত্রীকে নিয়ে গেছে এটা জানার পর থেকে সে খুব মনোকষ্টে আছে। যদি সে একটি সুযোগ পেতো তাহলে ফিরতি তদ্বির দিয়ে রবিউলকে তার প্রথম স্ত্রীর সংসারে ফিরিয়ে দিতে পারতো।
এভাবে রবিউলের প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের আস্থা অর্জন করে গত ২৩শে জুন রাতে পরিবারের সদস্যদের সহোযোগিতায় কবিরাজির নামে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে রবিউলকে প্রথমে অজ্ঞান করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে ঘর থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে কথিত কবিরাজ ইসারত শেখ শ্বাসরোধ করে রবিউলকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত রবিউলের ভাই খোকন মোল্লা বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ৭ জনসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে তেরখাদা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার খুলনা সিআইডি গ্রহণ করে তদন্তকালে ঘটনার প্রকৃত অপরাধী ইসারত শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে।