× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চলচ্চিত্রে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য, দ্বন্দ্ব চরমে

বিনোদন

ফয়সাল রাব্বিকীন
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার

চলচ্চিত্রের অবস্থা অনেক দিন ধরেই ভালো নয়। তার ওপর গত বছর করোনার কারণে আরো এলোমেলো হয়ে যায় এ অঙ্গন। করোনার সময়ই সংগঠনগুলোর দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। সাম্প্রতিক সময়েও সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থামেনি, বরং বেড়েছে। একের পর এক পরস্পরবিরোধী বক্তব্য প্রশ্নবিদ্ধ করছে চলচ্চিত্র অঙ্গনকে। গত বছর এফডিসি’র ১৮টি সংগঠন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও মিশা সওদাগরকে বয়কট করে। করোনার সেই সময়ে চলচ্চিত্র নিয়ে উদ্যোগী হওয়ার চাইতে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যকেই বেশি প্রাধান্য দিতে দেখা যায়। এদিকে নতুন বছরে এসেও চলচ্চিত্রের উন্নয়ন তেমন চোখে পড়ছে না।
একের পর এক ছবির ঘোষণা আসছে। কিন্তু তৈরি হয়ে থাকা বড় বাজেটের ছবিগুলো মুক্তি দিতে চাচ্ছেন না প্রযোজকরা। বিভিন্ন হলে দর্শক সংখ্যাও নেহায়েত কম। সবমিলিয়ে চলচ্চিত্র যখন চরম সংকটে, ঠিক তখন একে-অপরকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য আসছে পরিচালক, নায়কসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। ক’দিন আগেই নায়ক ও প্রযোজক অনন্ত জলিল তার ছবির মহরতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের মুখোমুখি হন। শাকিব খানকে নিয়ে কাজ করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা তার? উত্তরে অনন্ত বলেন, এমন প্রজেক্টের জন্য অনেক প্রফেশনাল হতে হয়, গুড হিউম্যান হতে হয়। মোট কথা ব্যক্তিগত প্রোফাইল থাকতে হয় স্বচ্ছ। কারণ আমি যখন ইরানের সঙ্গে কাজ করতে যাই তখন ইরানের মেয়র, সংস্কৃতিমন্ত্রীর সঙ্গে আমার মিটিং করতে হয়েছে। তারা আমার ওপর তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। আমি আসলে কেমন সেটা যাচাইয়ের জন্য। তারা তদন্তের পর আমাকে নিয়ে ১৪ পৃষ্ঠার একটা রিপোর্ট দেন। বিদেশে কাজ করতে হলে ভালো প্রোফাইলের প্রয়োজন আছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। আপনি কলকাতায় ছবি করতে গেলে হয়তো এসব প্রোফাইলের দরকার হবে না। কিন্তু বলিউড, ইরান, তুর্কি এদের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি করতে হলে প্রোফাইল দরকার আছে। অনন্তর এমন বক্তব্যে শাকিব ভক্তরা ভালোভাবে নেয়নি। নেটদুনিয়া জুড়ে অনন্তকে নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়। এদিকে ক’দিন আগেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া ১০০ ছবির ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই বলেন, চলচ্চিত্রের এই দুঃসময়ে অত্যন্ত ইতিবাচক একটি ঘোষণা এটি। আবার এক পক্ষ বলেন, ঘোষণা কি ঘোষণাই থাকে নাকি বাস্তবে রূপ পায় সেটাই দেখার বিষয়! আবার অনেকে এতগুলো ছবির বাজেট নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ঠিক এমন সময়ে দিন কয়েক আগে শাকিব খান হাজির হন তার নতুন ছবি ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’ ছবির সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে বক্তব্যের এক পর্যায়ে শাপলা মিডিয়ার ১০০ ছবির ঘোষণাকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমার দেশের সিনেমা এখন ১০ লাখ, ২০ লাখে নেমে এসেছে! হোয়াট অ্যা ফিল্ম ম্যান! কী চিন্তাধারা! কী রকম ব্যাপার। তিনি আরো বলেন, তারা বলছে, ভাই না খেয়ে মরছে, মানুষগুলোকে আমি কাজ দিচ্ছি। তোমার কাজ দেয়ার দরকার নেই স্টুপিড! তুমি কে কাজ দেয়ার? ১০০-৫০০ সিনেমার দরকার নেই, আমাদের একটি সিনেমা দরকার। এদিকে শাকিবের এমন বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় চলচ্চিত্র পাড়ায়। বিষয়টি নিয়ে গুণী পরিচালক, প্রযোজক ও কাহিনীকার দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, সেলিম খান একশ’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করবে এ সংবাদে কে কতটুকু খুশি হয়েছে আমি জানি না, তবে আমি ততটুকু খুশি হয়েছি যতটুকু খুশি ছোটবেলায় ঈদের চাঁদ দেখলে হতাম। খুশি হয়েছি এজন্য আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গন আবার নতুন করে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে পাবে। তবে একজনকে খুশি হতে দেখলাম না, সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতে দেখলাম শাকিবের বক্তব্য। তার কথা শুনে আমার মনে হলো এতে তার হিংসা হয়েছে। যদিও সে কারো নাম ধরে বলেনি, তবুও আমার মনে হলো সেলিম খানের একশ’ চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়েই বলেছে। কাকে যেন স্টুপিডও বলেছে। কিন্তু ওর তো এমন হিংসা করার কথা নয় কারণ সে আমাদের কোনো প্রযোজক নয়, সে শুধুমাত্র একজন নায়ক। এদিকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে না গিয়ে সবার উচিত একসঙ্গে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করা। না হলে পিছিয়ে পড়া ইন্ডাস্ট্রি আরো পিছিয়ে পড়বে। বাইরের মানুষের কাছে হাসির পাত্রে পরিণত হবে এ অঙ্গন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর