রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার নাম ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কমিটির সদস্য তালিকায় থাকায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। সোমাবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের এই মনোভাব ব্যক্ত করেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, সমপ্রতি নড়াইলের এক আদালতে অসুস্থ অবস্থায় নিজ গৃহে কারারুদ্ধ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মতো অমানবিক ও অস্বাভাবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি যখন চিকিৎসার জন্যও ঘরের বাইরে যেতে অক্ষম তখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সুদূর নড়াইলে আদালতে হাজির হওয়ার নিষ্ঠুর আদেশ জারির সংবাদে সঙ্গতভাবেই দেশবাসী বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। অনতিবিলম্বে হয়রানিমূলক ও অমানবিক এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাই। একই সঙ্গে ওই হাস্যকর হয়রানিমূলক মামলায় দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে কুক্ষিগত ও কলুষিতকারী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটিতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলকে সদস্য নিয়োগ করা অনেকেটাই বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। একটি সাংবিধানিক পদের অধিকারীকে দলীয় পদে নিযুক্ত করা দেশের ইতিহাসে একটি নতুন ঘটনা এবং নিঃসন্দেহক্রমে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার কার্যালয়কে নগ্ন দলীয়করণের অপচেষ্টা ও একটি অত্যন্ত মন্দ দৃষ্টান্ত।
নজরুল বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো কোনো সাংবিধানিক পদে দলীয় সমর্থক কাউকে নিয়োগ করার দৃষ্টান্ত থাকলেও কোনো সাংবিধানিক পদাধিকারীকে দলীয় পদে নিযুক্ত করার ঘটনা ১৯৭৫-এর বাকশালের কমিটি গঠনের পর আর ঘটেনি। জনগণের অর্থে যাদের বেতন-ভাতা পরিশোধিত হয় তাদের কারো বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হওয়া বা করা শুধু অন্যায় নয়, অনৈতিকও বটে।
বিএনপি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে, দেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার পদের নিরপেক্ষতা যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটর্নি জেনারেলের উচিত হয় দলীয় পদ কিংবা এটর্নি জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করা।
যারা তাকে নিয়োগ দিয়েছে তাদেরও উচিত অনৈতিক এই বিষয়টির গুরুত্ব ও জনমনে এর অনিবার্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে দলের উপ-কমিটি থেকে অবিলম্বে অ্যাটর্নি জেনারেলকে বাদ দেয়া।