× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অন্যদের পরীক্ষার কি হবে?

শেষের পাতা

পিয়াস সরকার
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার

আন্দোলনের মুখে সাত কলেজের পরীক্ষার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলো। রাজধানীর স্বনামধন্য এই সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা দাবির মুখে কলম হাতে বসবার অনুমতি পেলেও প্রশ্ন অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর কি হবে?
রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী প্রিয়া দেবনাথ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভাইরে আমাদের মুক্তি দেন। একটা ভাইবা আছে কোনোরকম পার করে দেন। আর কতোদিন পরীক্ষার টেনশন নিয়ে থাকা যায়?’ মাদারীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান শুভকে ফোন দিতেই তিনি বললেন, আবার কোনো দুঃসংবাদ আছে নাকি ভাই? এই পরীক্ষা নিয়ে কতোদিন ঝুলে ছিলাম। এরপর তাদের বোধোদয় হলো, পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। ফের কোনো কথাবার্তা ছাড়াই বন্ধ করে দেয়া হলো পরীক্ষা। আমি অবাক হয়ে যাই, এতদিন করোনার ভয় ছিল না। হঠাৎ করোনার ভয় চলে আসলো।
পরীক্ষা চলা অবস্থায় স্থগিত করা হলো। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী যদি মুখ ফস্কে এটা বলে থাকেন, দয়া করে শুধরে নেন। আমরা কি আপনাদের শত্রু?

পাবনার এডওয়ার্ড কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তারিক হাসান বলেন, বেকার থাকতে থাকতে অপদার্থ লাগছে নিজেকে। কেন আমাদের এতদিন ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। আমি অবাক হয়ে যাই, তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লোকসংখ্যা দেখে। সরকারের নিয়ন্ত্রণ সেখানে নেই। নাকি করোনা শুধু ভর করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে?
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুয়ার। ক্লাসরুমে ঝুলছে তালা। ক্লাসরুমে তালা ঝুললেও স্বাস্থ্যবিধির সাত শর্ত মাথায় নিয়ে পরীক্ষা চলমান ছিল। এরইমধ্যে সোমবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, ১৭ই মে তালা খুলবে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের। আর ২৪শে মে শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান। সেইসঙ্গে স্থগিত থাকবে সকল ধরনের পরীক্ষা। ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে হতাশা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। আর পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তে প্রকাশ পায় ক্ষোভ।
১৩ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত দেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষা নিতে পারবে। এর জন্য মানতে হবে সাতটি নির্দেশনা। এরপর শুরু হয় পরীক্ষা। পরীক্ষা দিতে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির কোনো তথ্য মেলেনি। এমনকি মেলেনি আক্রান্ত হওয়ার তথ্যও। তবে এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন এই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত? শিক্ষার্থীরা হঠাৎ আসা শত্রুর কারণে প্রায় এক বছর শ্রেণি পাঠদানের বাইরে। হচ্ছে না পরীক্ষা। কিন্তু এরপরও চলমান পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় সেশনজটের চিন্তা বাড়ছে তাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, আমাদের বর্তমানে প্রধান সমস্যা পরীক্ষা না হওয়া। অনলাইনে নানা অসন্তোষ থাকলেও চলছে ক্লাস। আমাদের মাথায় রাখতে হবে পরীক্ষা না হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়েও আমাদের বিপদের মুখে পড়তে হবে। তাদের বসতে দেবো কোথায়? হলের বিষয় তো আছেই। এখন পরীক্ষাগুলো হঠাৎ বন্ধ করে দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
শুধুমাত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বছরে চার শতাধিকের বেশি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আটকে যাওয়া পরীক্ষার মধ্যে অন্যতম মাস্টার্স ফাইনাল, ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষ, অনার্স চতুর্থ বর্ষ।

বাংলাদেশে সোনার হরিণ সমতুল্য সরকারি চাকরি। আর শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ বিসিএস। সময়মতো বিসিএস দিতে পারবেন কিনা এ নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন সমস্যা হবে না। তবুও সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসায় শঙ্কা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীরা জানান, এসব পরীক্ষার বিষয়গুলো মাথায় থাকায় তারা সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলোতেও মন দিতে পারছেন না।

নিয়ম অনুযায়ী সেশনজটের মুখে পড়বেন দেশে অনুমোদিত ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। যেহেতু ছয় মাসের সেমিস্টারের নিয়ম থাকলেও তারা চার মাসের সেমিস্টার পরিচালনা করেন। যদিও তারা পরীক্ষা না নেয়ার এই আইন কতোটা মানবেন তা নিয়ে প্রশ্ন বরাবরই রয়ে যায়। করোনার সময় ইউজিসি’র দেয়া অধিকাংশ আইনই তারা মানেননি। এমনকি এখনো তারা নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিচ্ছেন পরীক্ষা, অনলাইনে প্রাকটিক্যাল ক্লাসসহ নানা নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর