× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বান্দরবানে অসহায় শিল্পীদের অনুদানের টাকা পেলেন সচ্ছল ও সরকারি চাকরিজীবীরা

বাংলারজমিন

বান্দরবান প্রতিনিধি
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শুক্রবার

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া বান্দরবানের শিল্পী, কলা-কুশলী ও কবি সাহিত্যিকদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে অনুদানের টাকা প্রদান করা হয়েছে। বুধবার  বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন তিবরিজী শিল্পীদের মাঝে এসব অনুদানের টাকা তুলে দেন। এসময় বান্দরবানের ৬১ জন কর্মহীন শিল্পীদের ১০ হাজার টাকা করে মোট ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এদিকে অনুদানের তালিকায় সচ্ছল ও সরকারি চাকরিজীবীদের নাম থাকায় বান্দরবানের শিল্পী সমাজে দেখা দিয়েছে নানা সমালোচনা। ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। সরকারি চাকরিজীবী সচ্ছল পরিবারের শিল্পী, এমনকি একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি অনুদান পাওয়ায় এ বির্তক দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীরা। বান্দরবানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রবীণ শিল্পীরা অভিযোগ করে বলেন, করোনাকালীন কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় শিল্পীদের অনুদান দেয়ার নামে সরকারি চাকরিজীবী সচ্ছল পরিবার ও শিল্পী নয় এমন অনেকের নাম প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের তালিকায় রয়েছে। যার ফলে প্রকৃত পক্ষে অসচ্ছল দরিদ্র অনেক শিল্পী অনুদান পায়নি যারা প্রকৃত পক্ষে করোনাকালীন সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছিল।
অনুদানের তালিকায় দেখা গেছে বান্দরবান জেলা পরিষদে চাকুরিরত তপন কুমার ভট্টাচার্য্য তবলা শিল্পী হিসেবে ও কন্ঠ শিল্পী হিসেবে তার স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা দেবীকা ভট্টাচার্য্যসহ একই পরিবারের ৩ জন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছোটন দাশ, যন্ত্র শিল্পী হিসেবে জেলা পরিষদ এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা উচিং মং, কন্ঠশিল্পী হিসেবে জেলা প্রশাসনের কর্মচারী আব্দুল মান্নান হাওলাদার তবলা শিল্পী হিসেবে অনুদানের তালিকায় রয়েছে। এছাড়াও তালিকায় শিল্পী নয় এমন অনেকের নাম রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমে বান্দরবান থেকে এ তালিকা পাঠানো হয়েছে। তালিকা প্রণয়নের সময় কারো সাথে কথা না বলে পরামর্শ না করে তালিকা প্রস্তুত করায় এ সমস্যা হয়েছে বলে মনে করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। বান্দরবান মারমা শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি চথুইপ্রু বলেন করোনাকালীন সময়ে যারা অসহায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এ অনুদান। কিন্তু তালিকায় যাদের নাম দেয়া হয়েছে এদের বেশির ভাগ শিল্পীকেই চিনি না। এছাড়া অনেক সচ্ছল পরিবার ও চাকরিজীবীর নাম রয়েছে। কিন্তু প্রকৃত অসচ্ছল অনেক কর্মহীন শিল্পী অনুদানের টাকা পায়নি। তালিকা প্রস্তুতের সময় কারো সাথে সমন্বয় করা হয়েছে কিনা জানি না। তবে আমি এবিষয়ে কিছু জানি না তালিকা প্রকাশের পর দেখেছি। সঙ্গীত শিল্পী থোয়াচিং প্রু নিলু বলেন, তালিকার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে শুনেছি করোনাকালীন কর্মহীন শিল্পীদের অনুদান দেয়া হয়েছে এবং এটা তাদেরই প্রাপ্য করোনাকালীন সময়ে যেসব শিল্পী উপার্জনহীন হয়ে পড়েছিল যাদের আয়ের পথ বন্ধ ছিল যাদের পরিবার অসচ্ছল। আমি নিজের কথা বলব একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে যদি আমার নাম এ তালিকায় দেয়া হত তাহলে আমি নিষেধ করতাম। কারণ আমি সঙ্গীত শিল্পী হলেও আমি একজন ব্যাংকার। করোনাকালে আমার আয়ের পথ বন্ধ ছিল না। আমি না নিলে আমার জায়গায় প্রকৃত কর্মহীন একজন শিল্পী অনুদান নিতে পারবে। কবি সাহিত্যিক আমিনুর রহমান প্রামাণিক বলেন, সরকারি কোন কর্মচারী কর্মকর্তা মানবিক সাহায্য পাওয়ার উপযুক্ত নয়। কেন না তারা সরকারের কাছ থেকে বেতন পায়। এ তালিকায় অনুদান প্রাপ্ত অভিনয় শিল্পী শান্তি সারকী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরেকটু সুবিবেচনা করে তালিকা প্রণয়ন করলে এ বিতর্কের জন্ম হত না। উপস্থাপক আশীষ বড়ুয়া বলেন, কর্মহীন শিল্পীদের অনুদান দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই তবে প্রধানমন্ত্রীর এ অনুদান যাচাই বাছাই করে প্রকৃত কর্মহীন অসচ্ছল শিল্পীদের বিতরণ করা হলে আর এ বিতর্কের সৃষ্টি হত না। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবে। এ বিষয়ে জেলাপ্রশাসনের সহকারী কমিশনার কায়েসুর রহমান বলেন, তালিকাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রণনয়ন করা হয়নি। জেলা শিল্প কলা একাডেমি তালিকা প্রণয়ন করে পাঠিয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ত্রাণ তহবিলের টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করেছে। তালিকার বিষয়ে শিল্প কলা একাডেমি বলতে পারবে। এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা শিল্প কলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, করোনা কালীন সময়ে মাত্র তিন দিনের মধ্যে ৫০ জনের তালিকা করে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। তখন করোনা পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ ছিল সবাইকে ডেকে সমন্বয় করার মত পরিস্থিতি ছিল না। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি যাদেরকে পেরেছি বলেছি। নির্ধারিত সময়ে ৬১ জন নাম এনআইডি কার্ড আমার কাছে এসেছে সবার নাম আমি পাঠিয়ে দিয়েছি সবাইকেই অনুদান দেয়া হয়েছে। তালিকা যাচাই বাছাই এর কোন বিষয় এখানে নেই। কেন না যারা নাম দিয়েছে সবার নাম ই পাঠিয়েছি। নাম দিয়ে কারো নাম যদি বাদ পড়ত তাহলে তালিকা প্রণয়ন এর ব্যাপার আসত। সরকার ৫০ জনকে দিবে বলেছে সর্বমোট ৬১ জনের নাম এসেছিল আমি সবার নাম পাঠিয়েছি সবাই পেয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর