নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে অপহরণের পর গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার আলাইয়ারপুরে হীরাপুর গ্রামের ওই ছাত্রী প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন ছাত্রীটির মা। মামলায় একই এলাকার রাসেল (২৫), জোবায়ের (২৪), সাইফুল ইসলাম ইমন (২২) এবং ফয়সাল নামে চার যুবককে আসামি করা হয়েছে। পরে ওই রাতেই বেগমগঞ্জ পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভুক্তভোগীর মা জানান, ২০১৮ সাল থেকে একই এলাকার ইমন, রাসেল আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে নিষেধ করলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বলে- ‘আমাদের কথায় রাজি না হলে তোর মা’কে মেরে ফেলবো’।
তিনি বলেন, এরপর একদিন রাসেল ও ইমন বাড়িতে এসে আমাকে কৌশলে কোমলপানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে অস্ত্রের মুখে মেয়েকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে এক দোকানিকে ডেকে এনে জোর করে মেয়ের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা। ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা আরো বলেন, পরে ওই ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় এবং একাধিকবার তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। বাধ্য হয়ে মেয়েকে বিয়ে দিই। কিন্তু তাতেও রেহাই পাইনি। বিয়ের পরে মেয়ে বেড়াতে আসলে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা, ১ ভরি স্বর্ণালংকারও নিয়ে যায়। এর ৩ মাস পর রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মিরপুরের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে আনি। এ ঘটনার ১৫ দিন পর রাসেল পুনরায় মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ১০ দিন পর আবারো ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে আসি। তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ২৪শে ডিসেম্বর রাসেল আবার আমার মেয়েকে নিয়ে যায়। এখন সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে জানি না। গত সপ্তাহে রাসেল প্রস্তাব দিয়েছে আবারো ১ লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। মেয়েটির মা বলেন, দীর্ঘ ৩ বছরেরও বেশি সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খোলেননি। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাননি। বর্তমানে তারা অসহায় হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাহায্যে পুনরায় আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার মানবজমিনকে জানান, ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।