বাংলারজমিন
বিলুপ্তির পথে ঢুলি সম্প্রদায়
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
২০২১-০২-২৮
বাংলা সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঢুলি। যাত্রা, নাটক, বাউলগান, পালাগান পূজাসহ বাংলা সংস্কৃতি সমৃদ্ধের ক্ষেত্রে রয়েছে এ সম্প্রদায়ের বিশেষ অবদান। আধুনিক যন্ত্রাংশের দাপটে বিলুপ্ত প্রায় এ পেশায় জড়িত শতাধিক পরিবার।
জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছর ধরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিগর ও দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের হামিদপুরের বায়ানপাড়া এবং পোড়াবাড়ী এলাকায় বসবাস করে আসছে ঢুলি সম্প্রদায়। তাদের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন বাদ্যযন্ত্র। বর্তমানে এ পেশার রয়েছে আশা ব্যান্ড পার্টি, বাসন্তী ব্যান্ড পার্টি, মনির ব্যান্ড পার্টি, বাংলাদেশ ভাণ্ডারি ব্যান্ড পার্টি ও স্বপন ব্যান্ড পার্টি। প্রতিটি দলে কাজ করেন ৬ জন বংশীবাদক, ১ জন বাংলা সানাইবাদক, ১ জন করে জয় ঢাকবাদক, ঢোলবাদক, জুড়িবাদক, কারা বা ছোট জয়ঢাক বাদক আর করতাল বাদক। নাটক, যাত্রা, বাউলগান, পালাগান, সনাতন ধর্মের বিয়ে, পূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ওরস, র্যালিসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের ডাক পড়ে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজানো বাবদ জনপ্রতি মিলে ১ হাজার টাকা। বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, অগ্রহায়ণ, মাঘ আর ফাল্গুন তাদের উপার্জনের সময়।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামটিতে মাত্র ১টি সেমিপাকা ঘর। বাকি সব টিনের ঝুপড়ি। সরকারিভাবে স্যানিটারি পায়খানা তৈরির রিং পাট আর স্লাব বসানো হলেও সেগুলোতে টিনের বেড়া দেয়ার সাধ্যও হয়নি হতদরিদ্র এ পরিবারগুলোর। এ কারণে পলিথিন বা সিমেন্টের কাগজ দিয়ে ঘিরেই চলছে এর ব্যবহার। একইসঙ্গে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি নিয়ে মারাত্মক অসচেতনতায় গ্রামগুলোতে প্রতিটি পরিবারেই বাড়ছে সদস্য সংখ্যাও। বায়ানপাড়া গ্রামের ৪ সন্তানের জনক ও বয়োজ্যেষ্ঠ করনেট বাঁশিবাদক দরাজ আলী নার্গাচী (৭৮) ও মো. বাদশা বলেন ‘ঢোল ব্যবসা আমাগো জাতিগত পেশা। পূর্বপুরুষ থেকে এ ব্যবসা চইলা আসছে। ব্যবসা-বাণিজ্য নেই, তাই খুব অভাবে রয়েছি। বছরের ৬ মাস চলে এ ব্যবসা। যখন কাম থাকে না তহন রিকশা বাই। কেউ কেউ আবার হাটে-বাজারে ইঁদুর, তেলাপোকা, পিঁপড়া মারার ওষুধ বিক্রি ও নাপিতের কাজ কইরা চলে।’ বাঁশিবাদক জোয়াদ আলী নার্গাচী, শফিকুল ইসলাম নার্গাচী ও আহাম্মদ আলী ভাণ্ডারি নার্গাচী বলেন, ‘অন্য কোনো কাম জানা নেই বৈইলা কোনো রকমে এ পেশা দিয়াই বাঁইচা আছি। নাটক, যাত্রা, বাউলগান, হিন্দু বিয়ে, পূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ওরস, র্যালিসহ বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজাই। বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের কারণে আমাগো চাহিদা কইমা গেছে। বাংলার ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’ ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অঞ্জন কুমার সরকার জানান, সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নিয়ে দ্রুত ঢুলি সম্প্রদায়ের বসবাসরত বায়ানপাড়া গ্রামটি পরিদর্শন করা হবে। সমস্যা নির্ণয়সহ স্বাভাবিক জীবনযাপনের যথাসাধ্য সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়া হবে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আসা বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথাও জানান তিনি।
জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছর ধরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিগর ও দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের হামিদপুরের বায়ানপাড়া এবং পোড়াবাড়ী এলাকায় বসবাস করে আসছে ঢুলি সম্প্রদায়। তাদের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন বাদ্যযন্ত্র। বর্তমানে এ পেশার রয়েছে আশা ব্যান্ড পার্টি, বাসন্তী ব্যান্ড পার্টি, মনির ব্যান্ড পার্টি, বাংলাদেশ ভাণ্ডারি ব্যান্ড পার্টি ও স্বপন ব্যান্ড পার্টি। প্রতিটি দলে কাজ করেন ৬ জন বংশীবাদক, ১ জন বাংলা সানাইবাদক, ১ জন করে জয় ঢাকবাদক, ঢোলবাদক, জুড়িবাদক, কারা বা ছোট জয়ঢাক বাদক আর করতাল বাদক। নাটক, যাত্রা, বাউলগান, পালাগান, সনাতন ধর্মের বিয়ে, পূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ওরস, র্যালিসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের ডাক পড়ে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজানো বাবদ জনপ্রতি মিলে ১ হাজার টাকা। বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, অগ্রহায়ণ, মাঘ আর ফাল্গুন তাদের উপার্জনের সময়।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামটিতে মাত্র ১টি সেমিপাকা ঘর। বাকি সব টিনের ঝুপড়ি। সরকারিভাবে স্যানিটারি পায়খানা তৈরির রিং পাট আর স্লাব বসানো হলেও সেগুলোতে টিনের বেড়া দেয়ার সাধ্যও হয়নি হতদরিদ্র এ পরিবারগুলোর। এ কারণে পলিথিন বা সিমেন্টের কাগজ দিয়ে ঘিরেই চলছে এর ব্যবহার। একইসঙ্গে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি নিয়ে মারাত্মক অসচেতনতায় গ্রামগুলোতে প্রতিটি পরিবারেই বাড়ছে সদস্য সংখ্যাও। বায়ানপাড়া গ্রামের ৪ সন্তানের জনক ও বয়োজ্যেষ্ঠ করনেট বাঁশিবাদক দরাজ আলী নার্গাচী (৭৮) ও মো. বাদশা বলেন ‘ঢোল ব্যবসা আমাগো জাতিগত পেশা। পূর্বপুরুষ থেকে এ ব্যবসা চইলা আসছে। ব্যবসা-বাণিজ্য নেই, তাই খুব অভাবে রয়েছি। বছরের ৬ মাস চলে এ ব্যবসা। যখন কাম থাকে না তহন রিকশা বাই। কেউ কেউ আবার হাটে-বাজারে ইঁদুর, তেলাপোকা, পিঁপড়া মারার ওষুধ বিক্রি ও নাপিতের কাজ কইরা চলে।’ বাঁশিবাদক জোয়াদ আলী নার্গাচী, শফিকুল ইসলাম নার্গাচী ও আহাম্মদ আলী ভাণ্ডারি নার্গাচী বলেন, ‘অন্য কোনো কাম জানা নেই বৈইলা কোনো রকমে এ পেশা দিয়াই বাঁইচা আছি। নাটক, যাত্রা, বাউলগান, হিন্দু বিয়ে, পূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ওরস, র্যালিসহ বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজাই। বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের কারণে আমাগো চাহিদা কইমা গেছে। বাংলার ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’ ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অঞ্জন কুমার সরকার জানান, সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নিয়ে দ্রুত ঢুলি সম্প্রদায়ের বসবাসরত বায়ানপাড়া গ্রামটি পরিদর্শন করা হবে। সমস্যা নির্ণয়সহ স্বাভাবিক জীবনযাপনের যথাসাধ্য সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়া হবে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আসা বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথাও জানান তিনি।