ঢাকার বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকায় সৎ বাবার পাশবিক নির্যাতনে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৩ বছর বয়সী ওই শিশুর নাম তানজিলা। সৎ পিতা মহিউদ্দিন ও মা জরিনা বেগমের সঙ্গে কড়াইল বস্তির একটি ভাড়া বাসায় শিশুটি থাকতো। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মহিউদ্দিন তার সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। এতে শিশুটির অতিরিক্ত রক্তপাত হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে মহিউদ্দিন নিজেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ মহিউদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ডিএমপি’র গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, তানজিলার মা ৩ সন্তানের জননী জরিনা বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় মহিউদ্দিনের। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে জরিনা আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে মহিউদ্দিনকে বিয়ে করেন। মেয়ে তানজিলা ছাড়া জরিনার আরো দুই ছেলে তার বাবার বাড়িতে থাকে। ১০/১২ দিন ধরে মহিউদ্দিন ও জরিনা তানজিলাকে নিয়ে কড়াইল বস্তিতে একটি ভাড়া বাসায় থাকা শুরু করে। এখানে আসার পর থেকেই তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো। মহিউদ্দিন প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতো। এ জন্য গতকাল সকালে জরিনা রাগ করে তার মেয়েকে রেখে মাদারীপুরের বোনের বাড়ি চলে যায়। পরে মোবাইল ফোনে জানতে পারে তার মেয়ে মারা গেছে।
রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, জরিনা বোনের বাড়ি যাওয়ার পরপরই মহিউদ্দিন তার সৎ মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। তার গালে কামড় দেয়। একপর্যায়ে তানজিলাকে ধর্ষণ করে। এতে করে শিশুটির অবস্থা খারাপ হয়। পরে সে নিজেই তানজিলাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসে। সেখানে চিকিৎসকরা তানজিলাকে পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে চিকিৎসকরা ঢামেক পুলিশ ফাঁড়িকে বিষয়টি অবগত করেন। সেখান থেকে বনানী থানায় ঘটনাটি জানালে আমরা হাসপাতাল থেকে মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আনি। এ ঘটনায় শিশুটির মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করবেন। তিনি আরো বলেন, মূলত স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্বের বলি হলো এই শিশুটি। নিজের সৎ বাবাই তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করলো। জরিনা বেগম যদি বোনের বাসায় যাওয়ার সময় তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতো তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না।