মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি করেছে পুলিশ। এতে আজ রোববার কমপক্ষে ৭ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। স্থানীয় মিডিয়াকে উদ্ধৃত করে লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী অনলাইন গার্ডিয়ান বলেছে, দক্ষিণের ডাউয়ি শহরে নিহত হয়েছেন তিনজন। একজন নিহত হয়েছেন ইয়াঙ্গুনে। এ নিয়ে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর মোট কমপক্ষে ৭ বিক্ষোভকারী নিহত হলেন। রোববার বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ সরাসরি গুলি, কাঁদানে গ্যাস, স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে। অভ্যুত্থানের পর এটাই তাদের সবচেয়ে আগ্রাসী বিক্ষোভ বিরোধী দমনপীড়ন।
এর ফলে ডাউয়ি শহরে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছেন ইয়াঙ্গুনে। যেসব চিকিৎসক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তারা ইয়াঙ্গুনে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফিরে গিয়েছেন আহতদের চিকিৎসা দিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে তাতে দেখা যায় ইয়াঙ্গুনে লোকজন রক্তাক্ত ব্যক্তিদের নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছে। একজন মানুষকে রাস্তায় নিথর পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার শরীরে সরাসরি বুলেটবিদ্ধ হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে হ্লেডান জংসনে সরাসরি গুলি করা হয়েছে। সেখানে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ চলছিল। ইয়াঙ্গুনের আশপাশে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। এতে অংশ নেয়া একজন বলেছেন, ইঞ্জিনিয়ারদের একটি বিক্ষোভ র্যালিতে অংশ নিয়েছিলাম আমরা। পুলিশ স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া শুরু করে। এতে সবাই যে যেদিকে পেরেছেন দৌড়াতে থাকেন। আমি বুঝতে পারিনি কি করতো হবে।
শনিবার যারা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন তাদের অনেকেই গ্যাসবিরোধী মাস্ক, মাথায় হ্যাট এবং চোখে চশমা পরেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধেও পুলিশ কড়া জবাব দিয়েছে। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি টেলিভিশনের মতে, শনিবার বিক্ষোভ থেকে কমপক্ষে ৪৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে রোববার অধিবাসীরা দ্রুত রাস্তা ব্লক করে দিতে অস্থায়ী তাঁবুতে গিয়ে অবস্থান নেয়। তারা ফুটপাতের স্লাব তুলে, ময়লা রাখার বিন তুলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে, যাতে পুলিশ তাদের কাছে পৌঁছাতে না পারে। এ সময় তাদের কাছে একটি পোস্টার দেখা যায়। তাতে সুচির ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে- তিনিই আমাদের একমাত্র বিশ্বাস।
এ বিষয়ে পুলিশ বা ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সুচিকে গ্রেপ্তার করে গত ১লা ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা কেড়ে নেয় সামরিক জান্তা। তারপর থেকে মিয়ানমার এক বিশৃংখল পরিস্থিতিতে। এর আগে বিক্ষোভে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে তিনজন। তার সঙ্গে আজ রোববার আরো চারটি সংখ্যা যুক্ত হলো। ফলে এখন নিহতের সংখ্যা মোট সাত। প্রায় ৫০ বছরের সামারিক শাসনের পর মিয়ানমার সম্প্রতি গণতন্ত্রের পথে এক পা দু’পা করে হাঁটা শুরু করেছিল। কিন্তু ক্ষমতালোভী সামরিক বাহিনী তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আবার। তারা কেড়ে নিয়েছে গণতন্ত্র। এর প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছেন সর্ব স্তরের মানুষ। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিছু দেশ এরই মধ্যে সীমিত আকারে অবরোধ দিয়েছে। ওদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বিরল এক ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি অভ্যুত্থান বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছেন।
Md.Shamsul Alam
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রবিবার, ২:২০Thanks Myanmar for their protest against Illegal Govt but Bangladesh situation is very bad Mifia control the politics .