× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কমেছে টিকা নিয়ে কুসংস্কার-অনীহা, অসহায় মানুষের জন্য নিবন্ধন সহজ করার দাবি

অনলাইন

তারিক চয়ন
(৩ বছর আগে) মার্চ ১, ২০২১, সোমবার, ৬:৪০ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে শুরুতে অনেকের মধ্যে নানা ধরনের কুসংস্কার এবং অনীহা দেখা গেলেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টিকাদান কর্মসূচি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ২৮ ফেব্রুয়ারি দেয়া তথ্যমতে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে শুরু হওয়া জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে টিকা নিয়েছেন ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫২৫ জন। তাদের মধ্যে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে মাত্র ৭৩৩ জনের।

ভারতে উৎপাদিত অক্সফোর্ড - অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকার আমদানি প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও টিকাটি নিয়ে অবশ্য দেশে তেমন কোনো সমালোচনা কখনোই হয় নি। ইতিমধ্যেই মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মী, ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের তারকাসহ অনেকেই এই টিকার দুটি ডোজের প্রথমটি নিয়ে ফেলেছেন।

দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচির শুরুর দিনেই টিকা নিয়েছেন দেশের সবচেয়ে পরিচিত চিকিৎসক এবং সরকার বিরোধী বলিষ্ঠ কন্ঠ বলে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। টিকা নেয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'ভালো আছি। কোনো ভয় নেই। দেশবাসীকে আহ্বান করছি, যখনই আপনার তারিখ আসবে টিকা নেবেন। এটা আপনাদের কর্তব্য।
প্রধানমন্ত্রী যদি এখানে এসে টিকাটা নিয়ে যান তাহলে দেশবাসী আরও বেশি সাহস পাবে। এ টিকা প্রত্যেকের। আমার রিকশাওয়ালা ভাই, বাড়ির কাজ করেন, সাধারণ মানুষ যেন টিকা পাওয়ার সুবিধা পায়।'

ভারত থেকে টিকা আনায় এটা নিতে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনীহা প্রকাশ করেছেন। টিকা কিভাবে এতো দ্রুত পাওয়া গেলো, এর কার্যকারিতা শতভাগ কিনা, টিকা নেয়ার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা, বয়োজ্যেষ্ঠদের টিকা দিয়ে লাভ আছে-কি-নেই ইত্যাদি অনেক বিষয় নিয়েই অতিকথন বা গুজব ছড়িয়ে পড়েছিলো। এ বিষয়ে সুইডেনের গোথেনবার্গ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর খান সোহেল বলেন, 'ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে টিকা আনার ব্যাপারে অনেকে অনেককিছু বললেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভিসহ অনেক সংস্থারই টিকার প্রধান উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম। সেরাম শুধু বাংলাদেশ-ই নয়, সারা বিশ্বে টিকা সরবরাহ করছে। সুতরাং সেরাম টিকার বিষয়ে নেতিবাচক হয় এমন কোন ঝুঁকি নেবে না। টিকা নিয়ে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের মানুষের মধ্যেও শুরুতে অনীহা ছিল। ধীরে ধীরে সেটা কেটে গেছে।'

দেশে টিকা নিতে অনীহা প্রকাশ করা মানুষের সংখ্যা কমলেও নিবন্ধন নিয়ে অনেকেই দুর্ভোগে পড়ছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অসহায় এবং অশিক্ষিত অনেক মানুষকে অসাধু ব্যবসায়ীরা 'অর্থের বিনিময়ে নিবন্ধন করানো'র খবর আসছে হরহামেশাই। করোনার টিকা পাওয়ার অধিকার ধনী-দরিদ্র সবারই সমান হলেও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে কম্পিউটার বা স্মার্টফোন না থাকায় তাদের জন্য সহজ কোনো পদ্ধতি বের করার দাবি জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকার নিবন্ধন সীমাবদ্ধ না রেখে কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকা গ্রহণের সুযোগ রাখার দাবিও করছেন অনেকে। এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সোবহান অনীক বলেন, 'সারাদেশে রয়েছে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানে কম্পিউটারে দক্ষ জনবল রয়েছে। নির্দেশনা পেলে তারা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের অসহায় মানুষকে নিবন্ধনের বিষয়ে সাহায্য করতে পারেন।'

সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং ভেজালমুক্ত টিকার সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য টিকা সরকারিভাবে বিনামূল্যে প্রদান অব্যাহত রাখার দাবিও এসেছে সচেতন মহলের কাছ থেকে। তাদের দাবি, টিকা গ্রহণে অনীহা কাটাতে সরকারকেই বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। স্বচ্ছতার সাথে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। দেশের সর্বস্তরের মানুষকে আস্থার জায়গায় নিতে হবে। টিকা নিয়ে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অন্য কোনো সমস্যা হলে তা নিয়ে লুকোচুরি না করে মানুষকে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে হবে, জানাতে হবে।

তবে, কোন্ টিকা তুলনামূলকভাবে ভালো, টিকাদান প্রক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত, টিকা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে কিনা ইত্যাদি নিয়ে 'নানা মুনির নানা মত' থাকলেও সবাই একবাক্যে বলছেন- টিকা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার মানে নিজে অনিরাপদ থাকা এবং সমাজ তথা জাতিকেও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি মধ্যে ফেলে দেয়া।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর