বাংলাদেশ সরকারের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির আওতায় যেসব স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন তাদের অংশগ্রহণে তৃতীয় দিনের মতো শেষ হয়েছে ‘দুর্যোগে সাড়াদান ও জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম’ শীর্ষক উন্নত প্রশিক্ষণ সেশন। আজ বুধবার বিকালে কক্সবাজারের ইনানীর অর্কিড ব্লু হোটেলে জেলার উখিয়ার এই দিন ২৪ জন প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণে এই সেশন শেষ হয়। এর মধ্যে ১৫ জন ছিলেন পুরুষ ও ৯ জন ছিলেন নারী। তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক সমন্বিত এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই প্রশিক্ষণসহ তিনটি পর্বে মোট ৮৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে ৪৯ ছিলেন পুরুষ, ৩৬ জন ছিলেন নারী।
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (GAC- গ্যাক) ও অষ্ট্রেলিয়ান সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে ছিল বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
ভূমিধস, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসায় করণীয় নিয়ে ছিল মূল প্রশিক্ষণের আয়োজন। স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্যোগকালীন সময়ে যাতে মূল উদ্বারকর্মীদের সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারেন এজন্য এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এছাড়া স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে দুর্যোগকালীন কেউ আহত বা বিপদে পড়লে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় স্বেচ্ছাসেবকরা কিভাবে সহযোগিতা করবেন তা এতে তুলে ধরা হয়।
গত বছরের ৮ই নভেম্বর থেকে তিনটি পর্বে শুরু হয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। চলতি বছরের ১৭ই জানুয়ারি শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব। গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় পাঁচ দিন ব্যাপী তৃতীয় পর্বের এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ট্রেনিং কমপ্লেক্স বিভাগের ইন্সট্রাক্টর মনির হোসেন, ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর ইকবাল বাহার বুলবুল, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, নউটন দাশসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতাধীন দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির সেক্টর স্পেশালিস্ট শুভ কুমার সাহা, একই কর্মসূচির সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান, একই কর্মসূচির কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট আলাল আহমেদ প্রমূখ।
প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন ইডেন কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা মৌসুমী আরজু। তিনি জানান, আমরা এই পর্বে ২৪ জন অংশ নিয়েছি। এরমধ্যে থেকে ঘূর্ণিঝড় বা ভূমিধস এইরকম জরুরি অবস্থায় ১০ জনও যদি স্থানীয়দের উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে পারে সেটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। পরিবারের কাছ থেকে এই দুঃসাহসিক কাজে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। আর এক নারী প্রশিক্ষণার্থী, উখিয়া সরকারী কলেজের ছাত্রী আসমা আক্তার তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আমি আনন্দিত ব্র্যাকের এইরকম ব্যাতিক্রমী আয়োজনে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম যাতে অব্যাহত থাকে সংস্থাটির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করি।