করোনাভাইরাস বদলে দিয়েছে পৃথিবীর স্বাভাবিক নিয়মকানুন। ক্রিকেটসহ সব ধরনের খেলাধুলায় দারুণভাবে এর প্রভাব পড়েছে। মাঠে নামার আগে ক্রিকেটারদের থাকতে হচ্ছে চার দেয়ালে বন্দি। হ্যাঁ, ২৪শে ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ক্রাইস্টচার্চের হোটেলে ঘরবন্দি হয়ে আছে। সারাদিনে মাত্র ৩০ মিনিট মুক্ত হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে পেরেছে তারা। অবশ্য গতকাল থেকে জিম করার সুযোগ এসেছে। আর আজ থেকে মাঠের সুবাস নিতে পারবেন টাইগাররা। এতেই দারুণ উচ্ছ্বসিত দলের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন।
এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘এই ( মাঠে অনুশীলন) ব্যাপারে অনেক বেশি এক্সাইটেড। কারণ ঘরের মধ্যে থাকা খুব কষ্টকর। এখানে খুব বেশি কিছু করার নেই সারাদিন ঘরের মধ্যে থেকে। কাল (আজ) থেকে আমরা মাঠে যেতে পারবো। এই ব্যাপারটা ভাবতে আলাদা ভালো লাগা কাজ করছে। কাল থেকে যখন ক্রিকেট অনুশীলনে ফিরবো আস্তে আস্তে আমরা সবকিছু এডজাস্ট করে নিতে পারবো।’
২৩শে ফেব্রুয়ারি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু করোনার কারণে সেখানে পৌঁছে টানা ৭ দিন থাকতে হয় সেল্ফ আইসোলেশনে। যেখানে সারাদিনের সাড়ে ২৩ ঘন্টা তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীমদের হোটেল রুমে বন্দি থাকতে হয়েছে। এরই মধ্যে তিনবার করোনা টেস্ট করা হয়েছে। যার সবশেষটি গতকাল নেগেটিভ এসেছে। আর সেই কারণে গতকাল থেকে গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করে সুযোগ দেয়া হয়েছে জিম করার। এ বিষয়ে মিঠুন বলেন, ‘ নরমালি এতোদিন আমাদের মুভমেন্ট রেস্ট্রিকশন্স ছিল। এখন আস্তে আস্তে বিষয়গুলো নরমাল হচ্ছে। আজকে আমরা জিম করার সুযোগ পেয়েছি। এক সপ্তাহ পরে জিম ব্যবহার করে ভালো লাগছে।’ বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডের মাঠে এখন পর্যন্ত কোন ফরম্যাটেই জিততে পারেনি একটি ম্যাচও। কঠিন এই কন্ডিশনে এবার দলের আশাটাও দারুণ। বিশেষ করে নতুন বলের চ্যালেঞ্জটা ভালো ভাবেই নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত দল। কন্ডিশনের এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে মিঠুন বলেন, ‘এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এটা ডিফরেন্ট কন্ডিশন আমাদের থেকে। আমাদের খুব বেশি এই কন্ডিশনে খেলার সুযোগ হয় না। তারপরও আমরা সবাই জানি নিউজিল্যান্ডে নতুন বলটা খুব চ্যালেঞ্জিং হয়। আমরা দল হিসেবে নতুন বলে যদি সারভাইভ করতে পারি অবশ্যই আশা করছি আগের চেয়ে অনেক ইতিবাচক ফলাফল হবে। এটাকে আমরা অবশ্যই সুযোগ হিসেবে নিচ্ছি। কারণ, আগে কি হয়েছে এর চেয়ে সামনে কি করবো ভাবাটাই ভালো। যেহেতু এবার অনেক আগে এসেছি অনেক অনুশীলনের সুবিধা পাবো। আশা করা যায় দলের সবাই যতদ্রুত সম্ভব নিজেদের স্কিলটায় এডজাস্ট করে নিতে পারবো।’ নিউজিল্যান্ডে আরো ৭ দিন কড়া নিয়মেই থাকতে হবে বাংলাদেশ দলকে। মাঠে অনুশীলন করতে পারলেও সেখানেও নিয়মের কড়াকড়ি থাকবে। তবে এই কষ্টের পর মুক্তি মিলবে একেবারেই। আর হোটেলে বন্দি থাকতে হবে না। ঘুরে বেড়ানো যাবে, চলাফেরাতেও থাকবে না কোনো বিধিনিষেধ। আর এই চিন্তাটাই স্বস্তি দিচ্ছে টাইগার ক্রিকেটারদের। এ বিষয়ে মিঠুন বলেন, ‘আগে ওয়েদারের জন্য যে স্ট্রাগলটা করতে হতো আশা করি এবার এমন হবে না। তা ছাড়া ১৪ দিন পরে আমাদের স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু হবে। অবশ্যই এটা পজেটিভ দিক। অবশ্যই সবাই জিনিসটা এনজয় করবে। কারণ, প্রায় ১ বছর ধরে আমরা এই কোভিডের মধ্যে আছি। বাংলাদেশেও যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি হোটেল থেকে বের হওয়ার সুযোগ হয়নি। এখানে জিনিসটা একটু ভিন্ন। আমরা ১৪ দিন পর ফ্রি মুভ করতে পারবো।’