× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একদিনে নিহত ৩৮ /রক্তাক্ত মিয়ানমার

শেষের পাতা

মানবজমিন ডেস্ক
৫ মার্চ ২০২১, শুক্রবার

মিয়ানমারে রক্তস্রোত। মানুষের তাজা রক্তে ভেসে যাচ্ছে রাজপথ। একটি দুটি নয়। বুধবার কমপক্ষে ৩৮ জন সাধারণ মানুষের রক্তে হাত সিক্ত করেছে সামরিক জান্তা। এ দিনটিকে জাতিসংঘ ‘ব্লাডিয়েস্ট ডে’ বা সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন হিসেবে বর্ণনা করেছে। মিয়ানমারে জাতিসংঘের দূত ক্রিস্টিন শ্রানার বার্জেনার বলেছেন, দেশটির চারদিক থেকে হতাশাজনক ফুটেজ আসছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা এদিন বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও সরাসরি গুলি করেছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

বুধবার নিহত ৩৮ জন মিলে অভ্যুত্থানের পর সামরিক জান্তার অধীনে কমপক্ষে ৫০ জন প্রাণ হারালেন। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে গত ১লা ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। এরপর থেকে দেশটিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং গণঅসহযোগ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্র হয়ে উঠেছে। তাদের দাবি- সামরিক শাসনের অবসান হতে হবে। অং সান সুচি সহ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারি নেতা ও গ্রেপ্তার করা নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করছে না সামরিক জান্তা। পাল্টা বিক্ষোভকারীদের রক্তে নিজেদের হাত রঞ্জিত করছে। এর তীব্র নিন্দা উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে। এত মানুষের মৃত্যুতে শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন আহ্বান জানিয়েছে বৃটেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর একদিন আগে মঙ্গলবার মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলো আসিয়ানের সম্মেলনে সেনাবাহিনীকে সংযত আচরণ করতে আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু কোনো আহ্বানেই সাড়া দিচ্ছে না সেনারা। এ অবস্থায় ক্রিস্টিন শ্রানার বার্জেনার বলেছেন, সব মিলে মিয়ানমারে এখন নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৫০। আহত হয়েছেন অনেক মানুষ। তিনি বলেছেন, একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, নিরস্ত্র একজন স্বেচ্ছাসেবক মেডিকেল ক্রু’কে পিটাতে দেখা যাচ্ছে পুলিশকে। আরেকটিতে দেখা যাচ্ছে, এক বিক্ষোভকারীকে গুলি করা হচ্ছে। সম্ভবত তিনি রাজপথেই মারা গিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, আমি কিছু অস্ত্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চেয়েছিলাম এ বিষয়ে যে, তারা বিষয়টি পরিষ্কার করতে পারেন কিনা। কিন্তু তা হয়নি। তবে দৃশ্যত মনে হচ্ছে, পুলিশ ৯এমএম সাবমেশিন গানের মতো অস্ত্র ব্যবহার করেছে।

ওদিকে মিয়ানমারের ভেতর থেকে যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বলা হচ্ছে ইয়াঙ্গুন সহ বেশকিছু শহরে বিশাল বিক্ষোভে গুলি করেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। এর আগে তারা কোনো সতর্কতা দেয়নি। সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, বুধবার নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১৪ ও ১৭ বছর বয়সী দুটি বালক। এ ছাড়া নিহত হয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী। মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চল মোনিওয়াতে প্রতিবাদের সময় কমপক্ষে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় একজন সাংবাদিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এই বিক্ষোভে অন্য আরো কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। মিঙ্গায়ানে বার্তা সংস্থা এএফপিকে একজন স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসাকর্মী বলেছেন, সেখানে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। তিনি বলেছেন, তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সরাসরি গুলি ছোড়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর কোনো জলকামান ব্যবহার করা হয়নি। সরে যাওয়ার সতর্কতাও দেয়া হয়নি। বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি করা হয়েছে।

মান্দালয়ের একজন শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেছেন, কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে তার বাড়ির কাছে হত্যা করা হয়েছে। তার ভাষায়, বুধবার সকাল ১০টা বা সাড়ে দশটার দিকে পুলিশ এবং সেনারা উপস্থিত হয় ওই এলাকায়। তারা কোনো কথা না বলেই সাধারণ মানুষের ওপর গুলি শুরু করে। তারা রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। সরাসরি গুলি করেছে। তবে নিহতের বিষয়ে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর