× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কচুরিপানার তৈরি শৌখিন সামগ্রী যাচ্ছে বিদেশে

বাংলারজমিন

সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা থেকে
৬ মার্চ ২০২১, শনিবার

 ফেলে দেয়া, পচনশীল ও গবাদিপশুর খাদ্য এবং শুকনো কচুরিপানার নান্দনিক রূপ দিয়েছে গাইবান্ধার প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা। তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে মূল্যবান শৌখিন ঘর সাজানোর সামগ্রী। যেমন ফুলদানি, ফুলের টব, মাদুর, ঝুড়িসহ ঘর সাজানো অন্যান্য জিনিস। বিক্রি হচ্ছে দেশ পার হয়ে বিদেশ আমেরিকাতে। আর এ কাজ করে নারীরা এগিয়ে নিচ্ছে তাদের স্বল্পআয়ের সংসার। গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্র ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চলে আসেন তার শ্বশুরবাড়ি ভাষাপাড়ায়। পরে তিনি ওই এলাকার কয়েকজন নারীকে প্রশিক্ষণ দেন। তারপর ভাষাপাড়া, কঞ্চিপাড়া, মদনেরপাড়া ও সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর ও তালতলা গ্রামের আড়াইশ’ নারীকে নিয়ে শুরু করেন এ কাজ।
এরপর থেকে ওইসব গ্রামজুড়ে বেশকিছু বাড়ির আঙ্গিনায় নারীরা তৈরি করছেন শুকনো কচুরিপানা দিয়ে নানান ঘর সাজানো জিনিস। ৪টি গ্রামের আড়াইশ’ দরিদ্র নারী যুক্ত হয়েছেন এই কাজের সঙ্গে। কলেজপড়ুয়া হাসনা হেনা বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়িতে বসে থাকতে হয়। আমি বাড়ির কাজ, নিজের কাজ ও পড়ালেখার পাশাপাশি কচুরিপানা দিয়ে ফুলদানি তৈরি করি। দিনে ৫-৬টা পর্যন্ত ফুলদানি তৈরি করতে পারি। তাতে আমার প্রতিদিনের আয় হয় ২০০-২৫০ টাকা। গৃহিণী হালিমা বেগম বলেন, তার স্বামী জমিতে কাজ করে। চলতি শীতকালীন সময়ে কাজ করা সম্ভব হয়নি। স্ত্রী হালিমার আয়ের টাকায় সংসারের খরচ জোগাচ্ছে। তবে তিনি জানান, এ কাজ করে প্রকারভেদে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। আপাতত এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন ২৫০ নারী। তাদের স্বামীর আয় রোজগারের পাশাপাশি শুকনো কচুরিপানা দিয়ে তৈরি এই কাজ তাদের সংসারে উন্নতি এনে দিয়েছে। এতে খুশি গ্রামের মানুষও। কাজের উদ্যোক্তা সুভাষ চন্দ্র জানান, তার পুঁজি কম। সে কারণে এ কাজ সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। পানার এই ঘর সাজানো জিনিসপত্রের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিদেশেও চাহিদা কম নয়। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে নিজের এই হস্তশিল্প কারখানাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ জানান, তিনি এ কাজ কোনোদিন দেখেননি। শুকনো পানা এক সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হতো। গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন সেই পানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ফুলদানিসহ অন্যান্য জিনিস। এতে আমাদের নারীদের যেমন উপকার হচ্ছে, তেমনি গ্রামের তৈরি সামগ্রী দেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকার মতো উন্নত দেশে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর