× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

‘বিকল্প’ নেই মেয়র আরিফের হাতে

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৬ মার্চ ২০২১, শনিবার

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে ‘বিকল্প’ চান সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা। স্থায়ী স্ট্যান্ড হলেই তারা রাস্তা থেকে সরে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। কিন্তু ‘বিকল্প’ খুঁজে পাচ্ছেন না মেয়র আরিফ। এজন্য তিনিও নিয়েছেন ভিন্ন পথ। নগর সাজাতে হচ্ছেন কঠোর। তার এই কঠোরতার মুখে পরিবহন শ্রমিকরাও হচ্ছেন কঠোর। এরই মধ্যে তারা ফের আরিফুল হক চৌধুরীকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। সিলেটে ফুটপাথে হকার সমস্যা ছিল অন্যতম বড় সমস্যা।
এই সমস্যা সিলেটের পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফকে সঙ্গে নিয়ে সমাধান করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। হকারদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। এখন আর সিলেটের রাজপথ হকারদের দখলে নেই। হকার সমস্যার পর সিলেটে যে বড় সমস্যা দৃষ্টিতে এসেছে সেটি হচ্ছে অবৈধ স্ট্যান্ড সমস্যা। সিলেট নগরীতে কোনো স্থায়ী পরিবহন স্ট্যান্ড নেই। এ কারণে পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তায়ই গড়ে তুলেছেন স্ট্যান্ড। সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার পুরোটাই যেনো অবৈধ স্ট্যান্ড। সম্প্রতি ওখানে নগর পরিবহনের স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। ফুটপাথ ফাঁকা থাকলেও রাজপথ ফাঁকা নয়। ফলে রাস্তা বড় করে চার লেনের করা হলেও সুবিধা মিলছে না। সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকা। গোটা এলাকাই যেনো মাইক্রোবাসের স্ট্যান্ড। চৌহাট্টা থেকে রিকাবীবাজার অভিমুখে রাস্তার দু’পাশে রয়েছে স্ট্যান্ড। আবার চৌহাট্টা থেকে দরগাহ গেট এলাকা পর্যন্ত রয়েছে মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের স্ট্যান্ড। সম্প্রতি এসব স্ট্যান্ড উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেছে। রাজপথে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনার পর সমঝোতা বৈঠক হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ফের সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে শ্রমিকরা। তারা দাবি করেছে- চৌহাট্টায় স্থায়ী স্ট্যান্ড না দিলে তারা আন্দোলনে থাকবে। উত্তর চৌহাট্টা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন- গত ৩৫ বছর ধরে চৌহাট্টা থেকে সিভিল সার্জনের কার্যালয় পর্যন্ত এলাকাকে স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করছে শ্রমিকরা। যান চলাচলে ব্যাঘাত না ঘটায় তারা খালি জায়গা হওয়ার কারণে ওখানে স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছিল। কিন্তু পুলিশ ও সিটির শ্রমিকরা মিলে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। চৌহাট্টা এলাকায় স্থায়ী স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা না করলে সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনে থাকবে বলে জানান তারা। একই অবস্থা রিকাবীবাজার রোডের দরগাহ গেট এলাকায়। ওখানেও মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের চালকরা স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছেন। আরেকটি স্ট্যান্ড রয়েছে দাড়িয়াপাড়া গলির মুখে। নগরীর বন্দরবাজারের ব্যস্ততম কোর্ট পয়েন্ট এলাকা এখনো পুরোটাই স্ট্যান্ড। মধুবন মার্কেটের সামনে রয়েছে তামাবিল রোডে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড। কালেক্টরেট মসজিদের সামনে রয়েছে টুকেরবাজারগামী সিএনজি অটোরিকশা ও লেগুনার অবৈধ স্ট্যান্ড। সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকের উল্টো দিকে রয়েছে নগর এক্সপ্রেস বাসের স্ট্যান্ড। যাত্রী ছাউনির কাছে রয়েছে মদিনা মার্কেট এলাকার সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড, ধোপাদিঘীরপাড় এলাকায় রয়েছে তামাবিল রোড ও বুরহানউদ্দিন রোডে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা ও লেগুনার স্ট্যান্ড। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের আরো একটি স্ট্যান্ড রয়েছে। নগরীর আম্বরখানা এলাকা, শাহী ঈদগাহ, মদিনা মার্কেট, সুবিদবাজার, শিবগঞ্জ, টিলাগড়সহ বিভিন্ন স্থানে স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। সুবহানীঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর রয়েছে জাফলং ও কানাইঘাটগামী যাত্রীবাহী বাসের স্ট্যান্ড। পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন- যাত্রীদের প্রয়োজনে এসব স্থানে স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। যাত্রীদের প্রয়োজনেই স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু এখন সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শ্রমিক ও পুলিশ দিয়ে স্ট্যান্ড তুলে দেয়া হচ্ছে। স্ট্যান্ড তুলে দিলে গাড়ি কোথায় রাখা হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে না। সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম জানিয়েছেন- যানবাহনের জন্য সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। সেটি করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। অর্থাৎ সিটি করপোরেশনকে বিকল্প ব্যবস্থা বের করতে হবে। এরপর স্থায়ী স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করলে কেউ আর রাস্তাকে স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করবে না। তা না করে জোরপূর্বক, সন্ত্রাসী কায়দায় সরিয়ে দেয়া উচিত নয়। কারণ- পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের সেবা দিতে কাজ করছে। তিনি জানান- এ ব্যাপারে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে স্থায়ী স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু মেয়রকে সব বুঝিয়ে বলার পরও তিনি না বোঝার ভান করছেন। এ কারণে শ্রমিকরা তার ওপর ক্ষুব্ধ বলে জানান তিনি। এদিকে- মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও অসহায়। সিলেট নগরীর প্রতিটি স্থানে স্থায়ী স্ট্যান্ডের জায়গা বের করা কষ্টকর। আগের মতো সিলেট নগরীতে খালি জায়গাও নেই। এজন্য তিনি সম্প্রতি সিলেটের উন্নয়ন সংবলিত একটি বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ও এলজিআরডিমন্ত্রী তাজুল ইসলামের কাছে নগরীতে স্থায়ী স্ট্যান্ড নির্মাণের জায়গা চেয়েছেন। লিখিত আকারেও মেয়রের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে সিলেটের অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর