নদীর মাঝে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে সেতু। নির্মাণের ৬ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো কেউ সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারেননি। মানুষের দুর্দশা লাঘবে বেলান নদীর ওপর তৈরি করা হয় সেতুটি। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় আজও সেতুটি ব্যবহার করতে পারেননি এলাকাবাসী। বেলান নদীতে বর্ষা মৌসুমে পানি থাকলেও শুকনা মৌসুমে থাকে না। তাই ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। এ সেতুর পশ্চিম দিকে অন্তত আধা কিলোমিটার দূরে এক সময় একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। সেই সাঁকোর ওপর দিয়েই যুগ যুগ ধরে এলাকার মানুষ চলাচল করতো।
সাঁকোটি বন্যায় ভেঙে যাওয়ায় আর তৈরি করা হয়নি। একপর্যায়ে নির্মাণ করা হয় সেতুটি। এলজিএসপি-২ এর আওতায় ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। তবে সেতুটি নির্মাণ হলেও তৈরি করা হয়নি চলাচলের রাস্তা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণেই রাস্তাটির মাটি ভরাট করা হচ্ছে না। ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
পশ্চিম হাসিমপুর গ্রামের মো. ফজর আলী (৪২) বলেন, সেতুটির সংযোগ রাস্তায় মাটি ভরাট না করায় এ পথে চলাচল করতে পারছি না। তারা প্রায় ২ থেকে আড়াই কিলোমিটার পথ ঘুরে প্রয়োজনীয় কাজে নানান দিকে চলাচল করেন। এলাকার শত শত মানুষকে বিকল্প পথে চলাচল করতে হচ্ছে। এখানে রাস্তা তৈরি করে মাটি ভরাট করা হলে মানুষের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।
৮ম শ্রেণির ছাত্র মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, সেতুটির নির্মাণকাজ কী শেষ হয়েছে? সেতুটির দুই মাথায় সংযোগ সড়ক না থাকায় যানবাহন তো দূরের কথা সাধারণ মানুষও যাতায়াত করতে পারছে না। বর্ষার সময় আমাদের কষ্টের সীমা থাকে না। পশ্চিম হাসিমপুর গ্রামের শিক্ষার্থীদের ২-৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদ ও স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। এখানে সেতু হয়েছে ঠিকই। রাস্তা না থাকায় এলাকাবাসী কোনো সুফল পাচ্ছে না।
উত্তমপাড়া গ্রামের দ্বিজেন্দ্র নাথ রায় ও (৪০) পশ্চিম হাসিমপুর গ্রামের মিন্টু ইসলাম (২৪) বলেন, আমরা নদীর ওপারে কৃষি জমির আবাদি ফসল অনেক কষ্ট করে নিয়ে আসি। সেতু হলেও রাস্তা না থাকায় আমাদের কোনো কাজে আসে না। সেতুটির সঙ্গে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসীর কাজে আসছে না। সরকার যদি সেতুর দু’পাশে সংযোগ রাস্তা করে দিতো তবে আমাদের অনেক উপকার হতো।
এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আহমেদ মাহবুব-উল-আলম জানান, স্থানীয়ভাবে যদি এটা করা সম্ভব হয়, তবে শিগগিরই এর সংযোগ সড়ক করে সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করে দেবো। আর এটা সম্ভব না হলে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর যেভাবে করা সম্ভব তার পদক্ষেপ দ্রুত নেয়া হবে।