সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণ ও মেরামত কাজ ২০১৯ সালের ২৫শে মার্চ শুরু হলেও কাজের ধীরগতিতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই সড়কের প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। একদিকে সংস্কার কাজের ধীরগতি অন্যদিকে ধুলা-বালির কারণে যাত্রীসাধারণ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। যান চলাচলকালে ধুলায় ধূসর হওয়া সড়কের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজের খুশিমতো কাজ করলেও যেন দেখার কেউ নেই। কাজ শেষ হতে আর কতকাল অপেক্ষা করতে হবেÑ এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি ১২ ফুট থেকে উন্নীত করে ১৮ ফুট প্রশস্তকরণসহ সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে কাজটি পায় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন (জেবি) নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কার্যাদেশ অনুযায়ী ১৮ মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। সে হিসেবে গত বছরের ২৫শে অক্টোবর প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালক্ষেপণ করায় এখনো সংস্কার সম্পন্ন হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বালাগঞ্জ সিরিয়া স্ট্যান্ড থেকে জালালপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক খুঁড়ে বালি ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে যান চলাচলকালে এমনভাবে ধুলাবালি উড়ছে যেন- বিপরীত দিকে আসা একটি গাড়ি আরেকটিকে দেখতে পারছে না। যাত্রীদের অভিযোগ, সড়কটি সংস্কারের নামে আরো দুর্ভোগ বাড়ছে, ধুলার কারণে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের প্রার্দুভাব দেখা দিচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম গাফিলতি এবং সওজ কর্মকর্তাদের উদাসীনতার জন্যই এমনটি হচ্ছে। এই সড়কে অটোরিকশাই এখন ভরসা। কিন্তু ভাঙাচোরা সড়কে দুর্ভোগের সঙ্গে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। সড়কের পার্শ¦বর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ধুলাবালি কারণে তাদের অবস্থা খুবই নাকাল। বাড়ির আঙ্গিনায় রোদে শুকাতে দেয়া কাপড় ছোপড় ধুলায় সাদা হয়ে যাচ্ছে। ছোটছোট বাচ্চাদের রোগ বালাই লেগেই আছে। সিএনজি চালক ফজলু মিয়া, রায়হান মিয়াসহ আরো কয়েকজন চালক বলেন, ধুলার কারণে অনেক সময় বিপরীত দিকে আসা গাড়িগুলো দেখা যায় না। খুবই ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। আর কতকাল দুর্ভোগ পোহাতে হবে তা আল্লাই জানেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করছেন। তারা রাস্তায় পানি ছিটানোরও প্রয়োজন মনে করছেন না। বালাগঞ্জ উপজেলার সারসপুর গ্রামের বাসিন্দা সদরুল হাসান নবীন বলেন, দীর্ঘ দুই বছর পর এখনো ১৭ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ না হওয়ায় যাত্রীসাধারণকে ধুলায় অতিষ্ঠ হতে হচ্ছে। বৃষ্টিপাত শুরু হলেই নতুন ভোগান্তি যোগ হবে। পূর্বের ন্যায় খানাখন্দে পরিণত হয়ে ভোগান্তি আরো বাড়বে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার জগলুল হায়দার বলেন, ১৭ নয় কার্পেটিংয়ের বাকি আছে ১৪ কিলোমিটার। এই অংশ প্রস্তুত করা হচ্ছে জুন মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে। এখন থেকে প্রতিদিন গাড়ি দিয়ে রাস্তায় পানি ছিটানো হবে। সংস্কার কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী সুজন মিয়া বলেন, বৃষ্টিপাত শুরুর আগেই দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।