লকডাউন হলো সোজা কথায় যে যেখানে আছে সেখানে থাকা। এখানে কঠিন লকডাউন, নরম লকডাউন বলে কথা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা ডা. মোজাহেরুল হক এমনটিই জানালেন। বললেন, তালা মারা মানে তালা মারা। এখানে ঢিলেঢালা, আধা তালা দেয়া কোনোদিন হয় না! সুতরাং লকডাউন একটি বৈজ্ঞানিক পন্থা করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং সেখানে এটার মাধ্যমে মানুষের যে মুভমেন্ট সেটাকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র হাসপাতাল, ওষুধের দোকান সারাক্ষণ খোলা থাকবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক কিছু দোকান খোলা থাকবে। তিনি বলেন, লকডাউন কোনোদিন আংশিক হয় না। বাসা বাড়িতে যেমন আধা তালা মারা যায় না।
কথা হলো- ঘোষণার মধ্যেই তালগোল রয়েছে। দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মোট ৫টি ভেরিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা করা হচ্ছে। আমেরিকান, ব্রিটিশ, ব্রাজিল, সাউথ আফ্রিকা এবং জাপান। শত শত ভেরিয়েন্ট বেরিয়েছে ইতিমধ্যে। সাউথ আফ্রিকার এই ভেরিয়েন্ট আমাদের দেশে বের হওয়া এমন আশ্চর্যজনক কিছু না। এটা হতেই পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ভেরিয়েন্ট টিকা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সাউথ আফ্রিকার ভেরিয়েন্ট মডার্নার টিকায় কন্ট্রোল হবে। সুতরাং সীমিত গবেষণায় যেটা পাওয়া গেছে এটার ওপর ভিত্তি করে একটি সিদ্ধান্তে যাওয়া ঠিক হবে না। এটা নিয়ে আরো প্রচুর গবেষণা করা দরকার। কতো ভাগ লোক এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে সাউথ আফ্রিকান ভেরিয়েন্টে সংক্রমিত হয়েছে। একটি মাত্র গবেষণা দিয়ে এটা হবে না। গবেষণা চলতে থাকবে। এবং গবেষণার উপর ভিত্তি করে আমাদেরকে সরকারিভাবে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে। তিনি বলেন, শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলকেই করোনার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মানতে একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। শিশুকেও যথাসম্ভব নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। বড়দেরকে মাস্ক পরতে হবে। যতটা সম্ভব ঘরের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত শিশুদেরকে টিকা দেয়ার বিষয়টি গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে মনে রাখতে হবে শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউ এ সংক্রমণের আওতার বাইরে নয়। তরুণদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় তাদের মৃত্যুর হার কম হবে। আর বয়স্কদের শরীরে যেহেতু অন্যান্য রোগ থাকে সুতরাং তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি।