ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ইন্স্যুরেন্সে টাকা জমানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এক বছর ধরে লাপাত্তা সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পীরগঞ্জ শাখার ম্যানেজার বিরেন্দ্রনাথ রায়। এ ঘটনায় ৫ই এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, প্রায় পনের বছর আগে পৌর শহরের রঘুনাথপুর এলাকায় সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি. গণমুখী বীমা প্রকল্প নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন উপজেলার সাটিয়া গ্রামের বাঞ্জারাম রায়ের ছেলে ও নারায়ণপুর দ্বি-মুুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ রায়। প্রতিষ্ঠানটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বলে ইন্স্যুরেন্সের বাৎসরিক মেয়াদ শেষে জমা অর্থের চেয়ে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে মাসিক কিস্তিতে দুইশ’, পাঁচশ’, এক হাজার টাকা হারে প্রায় পনের বছর ধরে ৭ শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা তোলে। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪ শতাধিক গ্রাহকের ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদ ৩ বছর আগেই শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ জমানো অর্থ ফেরৎ নিতে গেলে গ্রাহকের কাছে বিভিন্ন টালবাহান শুরু করেন তিনি। পরে এক বছর ধরে লাপাত্তা হয়ে যায় বীরেন্দ্রনাথ রায়। ফকিরগঞ্জ এলাকার ষাটোর্ধ্ব বয়সী বৃদ্ধা আকলিমা বেগম কেঁদে কেঁদে বলেন, আমি গরিব মানুষ বুড়ো বয়সে ভালোভাবে চলার জন্য ওইখানে টাকা জমিয়েছি।
টাকা জমানোর মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। ৩ বছর ধরে ঘুরছি কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। ম্যানেজারকেও পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ওষুধ কেনার টাকা নেই। উপজেলার ভাকুড়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের স্ত্রী লাভলী বেগম বলেন, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সে লাভের আশায় পাঁচশত টাকা হারে মাসিক কিস্তিতে ১০ বছর মেয়াদে ৬০ হাজার টাকা জমা করেছি। লভ্যাংশসহ এক লাখ টাকা পাওয়ার কথা। ৩ বছর আগে ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। লাভ তো দূরে থাক এখন জমানো টাকাই ফেরত পাচ্ছি না। পৌর শহরের মুন্সিপাড়ার আজিজুল হক নামে এক ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান, বীরেন্দ্রনাথ রায় একজন শিক্ষক মানুষ। তাকে বিশ্বাস করে ওই প্রতিষ্ঠানে মাসিক সাড়ে তিনশত টাকা হারে পাঁচ বছর মেয়াদে টাকা জমিয়েছি। গত বছরের জুন মাসেই আমার ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার টাকা পাইনি। এ ব্যাপারে বীরন্দ্রেনাথ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগরে চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।