× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সমস্যা ডান চোখে বাম চোখ অপারেশন

বাংলারজমিন

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
১১ এপ্রিল ২০২১, রবিবার

ডান চোখের পরিবর্তে বাম চোখে অস্ত্রোপচার করলেন ডাক্তার। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর চক্ষু হাসপাতালে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে পরবর্তীতে বিনা পয়সায় ডান চোখটির অপারেশন করা হয়েছে। এরপরও ওই ভুল চিকিৎসার দায় এড়াতে টেস্ট রিপোর্টদাতা টেকনিশিয়ানের ‘ভুল’ বলে দাবি করছেন চিকিৎসক।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি জানাজানি হলেও রহস্য উদঘাটনে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মার্চে ভূঞাপুর চক্ষু হাসপাতালে ডাক্তার দেখান গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের হরিষা গ্রামের সুফিয়া বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা। ওই সময় টেস্টের মাধ্যমে তার ডান চোখে ব্লক নির্ণয় করা হয়। এ কারণে চিকিৎসক তার চোখে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত দেন। নির্ধারিত তারিখ অনুসারে ৬ই মার্চ তার চোখে অস্ত্রোপচার করানো হয়।
তবে ওইদিন ডান চোখের পরিবর্তে তার বাম চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। ভুক্তভোগী রোগীর অভিযোগ, তিনি আপত্তি জানালেও ডান চোখের পরিবর্তে বাম চোখে অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. ফারুক হাসান। রোগীসহ স্বজনরা ওই ভুল চিকিৎসার প্রতিবাদ করায় ওই চিকিৎসক অস্ত্রোপচারটি ভুল নয়, হাসপাতালের ল্যাব টেস্টের রিপোর্টে ভুলবশত বাম চোখে ব্লক দেখানো হয়েছে বলে জানান। এ কারণেই বাম চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১৬ই মার্চ বিনা পয়সায় ডান চোখে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।রোগী সুফিয়া বেগম (৬৫) বলেন, ‘আমার ডান চোখে সমস্যা ছিল। কিন্তু ডাক্তার আমার বাম চোখে অপারেশন করেছেন।’ রোগীর ছেলে জজ মিয়া বলেন, আমি আম্মাকে নিয়ে ৬ই মার্চ ভূঞাপুর চক্ষু হাসপাতালে যাই। ডাক্তার পরীক্ষা করে বলেন ডান চোখে ব্লক আছে ও অপারেশন করতে হবে। আম্মার অপারেশন করার অনুমতি দেই আমি। অপারেশন শেষে দেখি আম্মার বাম চোখ অপারেশন করা হয়েছে।  বিষয়টি ডাক্তারকে জানালে তিনি বলেন, পরীক্ষায় আপনার আম্মার বাম চোখে ব্লক দেখানো হয়েছে। তবে এটি কেন হলো এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি।
‘এর ১০ দিন পর আবার হাসপাতালে আম্মার চোখের সেলাই কাটতে যাই। ওইদিন ডাক্তার আবার আমার আম্মার ডান চোখের অপারেশন করতে হবে বলে জানান। এ সময় আমি আপনারা ভুল অপারেশন করেন বলে আপত্তি জানাই। এরপরও ডাক্তার বিনা পয়সায় আমার আম্মার ডান চোখের অপারেশন করে দেন।’
তবে হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সাদিয়া বলেন, ‘টেস্ট রিপোর্টে ডান চোখেই ব্লক দেখানো হয়েছে। এরপরও ডাক্তার বাম চোখ অপারেশন করেছেন। এখন তার ভুল ধামাচাপা দিতে আমার ও রিপোর্টের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভূঞাপুর চক্ষু হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ফারুক হাসান বলেন, ‘আমি রোগীর ডান চোখে ব্লক নির্ণয় করি এবং অপারেশনের জন্য বলি। তবে ল্যাব টেকনিশিয়ান ভুলবশত ডান চোখের পরিবর্তে বাম চোখে ব্লক দেখিয়ে রিপোর্ট করেন। এ কারণে আমি ডান চোখের পরিবর্তে আমি বাম চোখের অপারেশনটি করে ফেলি। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করেছে।’
ভূঞাপুর চক্ষু হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘ভুলবশত ডান চোখের পরিবর্তে বাম চোখ অপারেশন করা হয়েছিল। পরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে রোগীর ডান চোখটির অপারেশন করে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়েছে। তবে কী কারণে আর কেন এমন ভুল হয়েছে সেটি উদঘাটনে এখনো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. শাহবুদ্দিন খান বলেন, অতিদ্রুতই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঘটনাটির রহস্য উদঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর