জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক হাসান শাহরিয়ার আর নেই। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় করোনার উপসর্গ ও শারীরিক অন্যান্য জটিলতা নিয়ে তিনি প্রথমে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাকে আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে আইসিইউ বেডের সংকটের কারণে তাকে নেয়া হয় ইম্পাল্স হাসপাতালে। সেখানে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রবীণ সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শোক প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শনিবার বাদ আছর জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখানে জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তার মৃত্যুতে জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকাস্থ জালালাবাদ এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়। পৃথক শোক বার্তায় বলা হয়, হাসান শাহরিয়ার আজীবন বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার নীতিতে অটল ছিলেন। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
হাসান শাহরিয়ার দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক ‘সান’র সম্পাদক এবং পাকিস্তানের দৈনিক ডন পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সাময়িকী ‘নিউজ উইক’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কাজ করেছেন। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি এবং বৈদেশিক সাংবাদিক সংস্থা ওকাবের সভাপতি ছিলেন। দুই মেয়াদে সিজেএ’র আন্তর্জাতিক সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন হাসান শাহরিয়ার।
হাসান শাহরিয়ার সিলেটের কৃতি সন্তান সাংবাদিক মকবুল হোসেন চৌধুরীর কনিষ্ঠ পুত্র এবং আইনজীবী ও কলামিস্ট হোসেন তওফিক চৌধুরীর অনুজ। তার মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বিন্নাকুলী গ্রামে। পিতা মকবুল হোসেন চৌধুরী অবিভক্ত আসাম-বাংলার বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, খেলাফত আন্দোলনের নেতা ও ভাষাসংগ্রামী ছিলেন। ঐতিহ্যবাহী সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মকবুল হোসেন চৌধুরী ১৯৩৭ সালে আসাম ব্যবস্থাপক সভার সদস্য (এমএলএ) নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পত্রিকা ‘যুগভেরী’র (১৯৩২) প্রথম সম্পাদক। সিলেটের ‘যুগবাণী’ (১৯২৫) ও কলকাতার দৈনিক ‘ছোলতান’ (১৯৩০) পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন।