এইতো মাত্র সাত দিন আগের কথা। হাসপাতাল থেকে ফোনে চিৎকার করে বলে- বাচ্চু ভাই, আমারতো এইখানে ভাল্লাগেনা, ভাল্লাগেনা, ভাল্লাগেনা। আমারে বাসায় নিয়ে যায় না কেন! তার দুই-তিন দিন পর কন্যা জয়ীতা ও সন্তানসম শাহীন ওদের করোনামুক্ত মাকে কেরাণীগঞ্জের বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরশু হঠাৎই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবারো হাসপাতাল। আর আজ প্রত্যুষে আমার কন্যা এশা ও পুত্রবৎ সাকি হাসপাতাল থেকে ফিরে জানাল ‘মিতামা’ মারা গেছে। আমি নির্বাক! নিস্তব্ধতায় নিমজ্জিত হই! ভাবি মিতার শত কষ্ট-দু:খের মাঝে এভাবে হাসতে দেখিনি কাউকে। তার মতো জীবনকে ভালেবাসতে আমি কাউকে দেখিনি। এমনভাবে কাউকে জীবন উদযাপন করতে দেখিনি।
চোখের জলে চৈত্রের ভোরের আকাশটাকে ধূসর দেখতে থাকি। ভাবি ওই ধূসরে মিলিয়ে গেলে মানুষ আর কখনো ফিরে আসে না। আহা! অমন পরিশীলিত সুরেলা কণ্ঠের দেখা মেলা ভার। আর মিলবে কিনা জানি না। জীবন ও শিল্পের এমন শুদ্ধতম মিলন কালেভদ্রে ঘটে। আনন্দের মাঝেই জীবন উথলিয়া ওঠে একথা মিতাকে দেখলেই মনে হতো। দুঃখকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জীবনের আনন্দে শিশুর মতো করতালি দিতেন মিতা। ‘তুমি কেমন করে গাণ করো হে গুণী, আমি অবাক হয়ে শুনি কেবল শুনি', বিদায় প্রিয় মিতা হক।