× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দোকানের লাইট বন্ধ করতে বলায় আনসার সদস্যকে খুন

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে
১১ এপ্রিল ২০২১, রবিবার

লকডাউনে দোকানের লাইট বন্ধ করতে বলাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে ছুরিকাঘাতে আনসার বাহিনীর এক সদস্য খুন হয়েছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে নগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার পুঠিয়া বাজার থেকে মধাব কুমার ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মাধবের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক ও জুয়ার বোর্ড চালানোর অভিযোগ আছে।
মহানগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাধবকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একটি টিম কাজ করছিল। রাতেই অভিযান চালিয়ে পুঠিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাড়ি হেতেমখাঁ সবজিপাড়ায়।
নিহত আনসার সদস্যের নাম মিজানুর রহমান মিজান (৩৫)। তিনি নগরীর হেতম খাঁ সবজিপাড়া এলাকার মো. মনসুর রহমান মন্টুর ছেলে। মিজান টাঙ্গাইলের সফিপুরে আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সেখানে তিনি আনসার হ্যান্ডবল টিমের জুনিয়র কোচ ছিলেন। বাস্কেটবলও ভালো খেলতেন। খেলোয়াড় কোটায় আনসার সদস্য হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন।
এদিকে আনসার সদস্য ছুরিকাঘাতে নিহতের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত মাধব কুমারের বাড়ির সামনে অবস্থান করছিলো। কেউ কেউ গিয়ে বাড়ির গেট ধাক্কাধাক্কি করেন। এ সময় অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পাশে রেজা নামে এক ব্যক্তির দোকানের সামনে কয়েকজন বন্ধুসহ আড্ডা দিচ্ছেলেন নিহত মিজান। মিজানের আরেক বন্ধু হেতেমখাঁ এলাকার মদন কুমার ঘোষের ছেলে মাধব কুমার ঘোষও (৩৬) তাদের সঙ্গে ছিলেন। লকডাউনে মিজানুর ওই দোকানীকে লাইট বন্ধ করে ব্যবসা করতে বলেন। কিন্তু কেন লাইট বন্ধ করতে হবে এই প্রশ্ন তুলে মিজানুরের সঙ্গে তর্কে জড়ান মাধব। এ সময় তাদের দুজনের হাতাহাতিও হয়। তখন অন্য বন্ধুরা তাদের থামান। এরপর মিজানুর প্লান্টের ভেতরের এলাকায় ঢুকে আনসারদের কোয়ার্টারের সামনে সেখানকার সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর মাধব গিয়ে তাকে আচমকা ছুরিকাঘাত করেন।
মাধবসহ আরও কয়েকজন তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় মাধব পালিয়ে যান। পরে অভিযুক্ত মাধব কুমারকে পুঠিয়া থেকে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া পুলিশ। বর্তমানে লাশ রামেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। পরিবাবের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকা- ঘটনো হয়েছে।
মর্গের সামনে আহাজারি করছিলেন নিহত মিজানের মা মোছা. ময়না বেগম। আহাজারি করতে করতে বলেন, লকডাউন শুরুর প্রথম দিন (৫ এপ্রিল) সকালে ছেলে চাকুরি থেকে কয়েকদিনের ছুটিতে বাড়িতে আসে। আশা ছিলো এই সুযোগে ছেলে বিবাহ দিবো। কিন্তু ঘাতক মাধব আমার ছেলেকে খুন করেছে। আজ (শনিবার) দুপুরে ছেলে আমার ঘুমিয়ে ছিলো। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বাইরে যাওয়ার সময় আমাকে ডেকে একনজর তাকিয়েছিলো। কিন্তু সেই তাকানোই যে শেষ তাকানো হবে তা কি জানতাম? এই বলে বার বার মুর্চা যাচ্ছিলেন ময়না বেগম।
এদিকে পুলিশের অপরাধ বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ক্রাইম সিন ইউনিট এবং মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে (যে স্থানে মিজান খুন হয়েছেন) গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
রামেক হাসপাতালে থাকা বোয়ালিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শাহাদত হোসেন বলেন, ‘আমরা নিহতের ছুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেছি। নিহত মিজানের বুকের বামপাশের ছুরিকাঘাতে দুইটি গভীর জখম হয়েছে। এছাড়া চোখেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর