× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খুশির দিনে বিষাদের ছায়া মৃৎশিল্পীদের

এক্সক্লুসিভ

জয়নাল আবেদীন জয়, রূপগঞ্জ থেকে
১২ এপ্রিল ২০২১, সোমবার

রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ। বছরের এই সময়টা রূপগঞ্জের পালপাড়ার ঘরে ঘরে থাকে উৎসবের আমেজ। কর্মব্যস্ত থাকেন বয়োবৃদ্ধ থেকে ছোট শিশুসহ সবাই। বৈশাখের মেলায় মাটির জিনিসপত্র তৈরি ও বিক্রি করেন তারা। মৃৎশিল্পীদের জীবনে এই দিনগুলো সারা বছরের সংসার খরচের অধিকাংশ উপার্জন করার সময়। কিন্তু খুশির এই দিনে তাদের জীবনে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া। ‘ভাবছিলাম করোনা কইমা গেছে হেরল্লাইগা ফুলদানি, পশু-পাখি, পুতুল, মাটির ব্যাংক, হাঁড়ি-পাতিল, কলসসহ বিভিন্ন ধরনের মাটির জিনিস বানাইছিলাম পহেলা বৈশাখে বেচার লাইগা। কিন্তু করোনা রোগ হুট কইরা আবার বাড়নে সরকার লকডাউন দিয়া দিছে।
হের লেইগা পহেলা বৈশাখের মেলাও অইবো না হুনছি। মেলা না অইলে আমরা এসব মাটির জিনিস কই বেচমু। এভাবে দুঃখজর্জর কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের পালপাড়ার মৃৎশিল্পী কাজলী রানী পাল।’ এ কষ্ট শুধু কাজলী রানীর নয় পালপাড়ার প্রত্যেক মৃৎশিল্পীর। মেলা না হওয়ায় অনেকটা চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন এ উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। মৃৎশিল্পীরা জানান, বৈশাখের আয়ের ওপর নির্ভর করে তাদের বছরের বাকি দিনগুলো চলতে হয়। তাদের তৈরি মাটির জিনিসপত্র বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি বিক্রি হয় পহেলা বৈশাখের মেলাতে। গত বছর লকডাউন থাকায় এই পহেলা বৈশাখে কোনো মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারেননি তারা। ভেবেছিলেন এ বছর পহেলা বৈশাখের মেলাতে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। এ কারণে রাতদিন পরিশ্রম করে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেছিলেন তারা। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বাড়ায় লকডাউন তাদের জীবনে অনেকটা বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। কষ্টের ছাপ দেখা যায় তাদের চোখে-মুখে। এসব কারণে অনেকটা দিশাহারা রূপগঞ্জের পালপাড়া। কথা হয় মৃৎশিল্পী মিনা রাণী পালের সঙ্গে। তিনি জানান, এই মাটির জিনিসপত্রগুলো তৈরির এঁটেল মাটি প্রতি গাড়ি ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা করে কিনে আনতে হয়। এবার তিনি কিস্তি থেকে টাকা তুলে মাটি কিনে এসব মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেন। কিন্তু হঠাৎ করে লকডাউনের খবরে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। মেলায় মালামাল বিক্রি করতে না পারায় কিস্তির টাকাও পরিশোধ করতে পারবেন না। পরিবার নিয়ে চলাও অনেকটা দুষ্কর হয়ে পড়বে। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার নাসির উদ্দিন জানান, করোনা মহামারির কারণে মৃৎশিল্পীরা গত বছরও বৈশাখী মেলায় কোনো জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারেননি। এবারও মেলার শুরুতে লকডাউন। এটা খুবই পরিতাপের বিষয়। এ অবস্থা চললে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে তাদের সংসারে। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্‌ নুসরাত জাহান বলেন, করোনা মহামারির কারণে মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবই বন্ধ। বিশেষ করে রূপগঞ্জ উচ্চ সংক্রমণযুক্ত জায়গা। এ উপজেলায় কোনোভাবেই মেলা বসানো সম্ভব নয়। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা এলে মৃৎশিল্পীদের সহযোগিতা করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর