প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পরই চিলমারী নদীবন্দর পরিদর্শনে যান মন্ত্রী, এমপি ও কর্মকর্তারা। সেটাও ৪ বছর আগে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই এগোয়নি। কবে আলোর মুখ দেখবে বন্দরটি তাও জানা নেই। এখন অর্থছাড়ের জন্য একনেকের দিকে তাকিয়ে চিলমারীবাসী।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী চিলমারী সফরে আসলে চিলমারী নদী বন্দর চালুর ঘোষণা দেন। এরপরই ওই মাসের ২৩ তারিখ উপজেলার রমনা নৌ-ঘাটে নদীবন্দরের উদ্বোধন করেন তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। মনে আশা জাগে চিলমারীসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের।
আশায় বুক বাঁধে চিলমারী নদীবন্দর ফিরে পাবে চিলমারীর হারানো ঐতিহ্য। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
পরে আবারো ২০১৮ সালের জুন মাসে তৎকালিন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান পরির্দশনে গিয়ে অতি শিগগিরই বন্দর প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করার আশ্বাস দেন। কিন্তু এবারো আশ্বাসেই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এলাকাবাসীর মনে হতাশা দেখা দেয়। একে একে ওই এলাকা পরিদর্শন করেন ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সালাম, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে ভুটান অ্যাম্বেসির পক্ষে ভুটান অ্যাম্বেসির সিডিএএআই কি জাং ওয়াং চুক ও কাউন্সিলর (ট্রেড) মি. ডুমাং, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পানি সম্পদ মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক (এমপি)। সকলেই দ্রুত চালুর আশ্বাস দেন। কিন্তু দৃশ্যমান কাজ না দেখতে পেয়ে হতাশা বাড়ছে চিলমারীবাসীর। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ছাড়াও বিভিন্ন সময় পরিদর্শনে আসেন কুড়িগ্রাম-৪ সংসদীয় আসনের এমপি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে পরিদর্শনে যান পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সচিব মামুন-আল-রশিদ এবং বিআইডব্লিউটিএ-এর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সচিব মামুন-আল-রশিদ বলেন, এই এলাকার বাস্তব চিত্র দেখার জন্য সরজমিন এসেছি, এই বন্দর চালু হলে ভারত, ভুটান এর রুটটি সহজ হবে এবং এই অঞ্চলের পরিবর্তন হবে। আগামী একনেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত বন্দরটি চালু করার চেষ্টা করা হবে। এ কথায় চিলমারীবাসীসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষ আবারো আশাবাদী হন। আক্ষেপ নিয়ে চিলমারী নদীবন্দর এলাকার মানুষ বলেন- মন্ত্রী, এমপি, কর্মকর্তারা আসেন আর যান, কিন্তু হামার বন্দর তো উদ্বোধনের ৪ বছরেও চালু হইলো না, আর কবে হইবে, নাকি হইবে না, তাও তো বুঝি না গো ভাই। এই বন্দর চালু হইলে কতো মানুষের যে কর্মসংস্থান হইবে সাথে মানুষের সুখও হইবে বাহে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, চিলমারী নদীবন্দর চালু হলে মানুষের বেকারত্ব দূর হবে। তিনি বন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।