চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে মারা যান তিনি (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গনে। মিতা হকের জামাতা অভিনেতা মোস্তাফিজ শাহীন শিল্পীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মিতা হক গতকাল ভোর ৬টা ২০ মিনিটে চলে গেছেন। সবাই ভালোবাসা আর প্রার্থনায় রাখবেন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর মিতা হককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
চারদিন আগে তার করোনা নেগেটিভ হলে বাসায় নেয়া হয়। হঠাৎ আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একুশে পদকজয়ী এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বেলা ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মিতা হকের মরদেহ ছায়ানটে নেয়া হয়। এরপর কেরানীগঞ্জের বড় মনোহারিয়ায় বাদ জোহর জানাজা শেষে দাফন করা হয়। মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায়। গত পাঁচ বছর ধরে মিতা হক কিডনি রোগে ভুগছিলেন। তিনি প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। তার চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। বাংলাদেশ বেতারের সর্বোচ্চ গ্রেডের তালিকাভুক্ত শিল্পী তিনি। ১৯৯০ সালে বিউটি কর্নার থেকে প্রকাশিত হয় মিতা হকের প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আমার মন মানে না’। সংগীতায়োজনে ছিলেন সুজেয় শ্যাম। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার এককভাবে মুক্তি পাওয়া মোট ২৪টি অ্যালবাম আছে। এরমধ্যে ১৪টি ভারত থেকে ও ১০টি বাংলাদেশ থেকে। তিনি ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে একুশে পদক প্রদান করে। ‘সুরতীর্থ’ নামে একটি গানের স্কুলও ছিল তার। তিনি রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন।