দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল দিন দিন হু হু করে বাড়ছে। ময়মনসিংহ জেলায় গত ১০ দিনে ১ হাজার ৮৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ২১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকি ৮৮ জন জেলার ১৩টি উপজেলার। যা শনাক্তের হার ১৭% জন। এসময়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে প্রমাণ হয়েছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় আশংকাজনক হারে করোনা বাড়ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ১লা এপ্রিল ১৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৭ জনেই সিটির। ২রা এপ্রিল ১৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষার করে ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এর মধ্যে ১৩ জন সিটির। ৩ এপ্রিল ১০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ১৪ জনেই সিটির। ৪ঠা এপ্রিল ২৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ২৯ জনেই সিটির। ৫ এপ্রিল ১৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ২৯ জনেই সিটির। ৬ এপ্রিল ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ৫২ জনেই সিটির। ৭ এপ্রিল ১৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ২৩ জনেই সিটির। ৮ এপ্রিল ২১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ২০জনেই সিটির। ৯ এপ্রিল ২০৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের করোন শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ১৭ জনেই সিটির। ১০ এপ্রিল ১৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরমধ্যে ১১ জনেই সিটির।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরচিালক জাকিউল ইসলাম জানান, গত ৬ এপ্রিল (বুধবার) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন রোড এলাকার রাফিজা বেগম (৬০) কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি ডায়াবেটিস ও হাইপারটশেন রোগে ভুগছিলেন। এছাড়াও, মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার অমল সরকার নামে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। তিনিও কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জাকিউল ইসলাম আরো জানান, এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার থেকে শপিংমল খুলে দেয়ায় আসন্ন পবিত্র রমজান, লকডাউনের খবরে মানুষ কেনাকাটায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। ময়মনসিংহ নগরীর স্টেশন রোড, গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার, চড়পাড়ার মোড়সহ ব্যস্ততম সড়কে অসহনীয় যানজট ও উপচেপড়া মানুষের ভিড়। কেউ কোন শারীরিক দূরত্ব মানছে না। মানছে না স্বাস্থ্য বিধি। এই পরিস্থিতিতে সচেতন মহল উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। প্রশাসন জেল-জরিমানা করেও স্বাস্থ্য বিধি মানাতে পারছে না।
সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, উদ্বেগজনক হারে করোনা রোগী বাড়ছে। করোনার এই দুর্যোগ থেকে বাঁচতে হলে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। সিটি করপোরেশন সচেতনতা বৃদ্ধিতে দিনরাত কাজ করছে। স্বাস্থ্য বিধি অমান্যকারীদের জেল-জরিমানা করছে। সিটি একটি গণবসতি এলাকা এখানে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য বিধি না মানলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। ঘরে থাকুন, নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যকে সুস্থ্য থাকতে সহযোগিতা করুন। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে।