খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার সকাল থেকে জারি হয়েছে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহন চলাচল, দোকানপাট, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।
কঠোর লকডাউন কার্যকরের আগে গ্রামে যেতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছেন রাজধানী ঢাকার লাখো মানুষ। গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়ার মধ্যেও ঢাকা ছেড়েছেন তারা। শহরের বাস স্টেশনগুলোয় দেখা গেছে তীব্র ভীড়।
এদিকে গত ৫ এপ্রিল থেকেই দেশজুড়ে জারি করা হয় কিছুটা শিথিল লকডাউন। এর আওতায় আগ থেকেই বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল।
একটি বাস পরিচালনা সংস্থার ব্যবস্থাপন রাকিব রহমান বলেন, লকডাউনের মধ্যে তাদের গ্রামে নিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই আমাদের।
একটি শপিংমলের কর্মী হামিদুর রহমান (২৫) জানান, গাবতলী বাস স্টেশন থেকে যশোরে নিজের বাড়িতে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু যশোরগামী কোনো মিনিবাস পাননি। অবশেষে তিনি ও আরো ১২ জন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করে নেন।
তিনি বলেন, সাধারণত যশোরের একটি টিকিটের মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এখন আমাকে প্রতিটি আসনের জন্য এক হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
অনেকে আবার ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রাকে করে গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। তবে সংক্রমণের আশঙ্কা বিবেচনা করে তাদের অনেককে থামিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
ঢাকাত্যাগী বেশিরভাগ মানুষই ঢাকার বিভিন্ন দোকান, অফিস ও বাজারে কর্মরত অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক। ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক দিদারুল আলম জানান, লকডাউনের মধ্যে তার পক্ষে ঢাকায় থাকা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা বলেছে আমার সেবা তাদের আপাতত প্রয়োজন নেই। আমি যে ডরমিটরিতে থাকি সেখানকার রাঁধুনীও চলে গেছে। তাই আমিও চলে যাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছেন অন্তত ৯ হাজার ৭৩৯ জন। সাম্প্রতিক সময়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।