× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চীন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ সহসাই মিটবে না

অনলাইন

এম আর রাসেল
(৩ বছর আগে) এপ্রিল ১৫, ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন

গতমাসে আলাস্কায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের সাথে প্রথম বৈঠকেই দুই দেশের প্রতিনিধিরা উচ্চবাক্য বিনিময় করেছেন। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের রেষারেষি দ্রুতই মিলিয়ে যাবে না।

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে চীন বিশ্বব্যবস্থার প্রতিষ্ঠিত নিয়মের বাইরে হাঁটছে যা বৈশ্বিক অস্থিরতা তৈরি করছে। সাইবার হামলা, দক্ষিণ চীন, উইঘুর ও হংকং ইস্যুতে চীন একপাক্ষিক উগ্রতা প্রদর্শন করছে। বিরোধী মতকে দমনের মাধ্যমে চীন কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রতিক্রিয়াকে চীন মেনে নিতে নারাজ। চীন মনে করে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার কোনো অধিকার রাখে না। চীন অবশ্য পশ্চিমা মিডিয়াকে সন্তুষ্ট করার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন নতুন এক কূটনীতির জন্ম দিয়েছে তা হল 'নেকড়ে যোদ্ধা কূটনীতি'।

এর মূল কথা হল চীনের উপর পশ্চিমা কূটনীতিকদের আক্রমণের বিরুদ্ধে আগ্রাসী জবাব।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ঈ কনিষ্ঠদের প্রেরণা দিতে এক বৈঠকে তাদের উলফ ওয়ারিয়ার হওয়ার আহবান জানান। সেই থেকেই চালু হয় নতুন শব্দবন্দ  'Wolf Warrior Diplomacy'।

এক সময় চীন যুক্তরাষ্ট্রের পরম মিত্র ছিল। বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই চীনের আজকের উন্নয়নের পদযাত্রার শুভ সূচনা হয়। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন চীনকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে সাহায্য করেন। ১৯৮০-৯০ সালে দেং জিয়াও পিং অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু করেন। মুক্ত বাজার অর্থনীতি চালু করেন, চীনের বাজার উন্মুক্ত করে দেন, আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থায় চীন যুক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চীন বিশ্ব ব্যবস্থায় মিশে যায়।

দেও জিয়াং পিং হলেন চীনের উন্নয়নের মূল রূপকার। তার ভাষায় 'Poverty is not socialism, to be rich is glorious'। তার সংস্কার কর্ম জুড়ে দারিদ্র্যা হটানোর সুরই ধ্বনিত হয়েছিল। তাঁর 'বিড়াল সাদা বা কালো সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো বিড়াল ইঁদুর মারে কিনা’ উক্তিটি সেই সময় বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তাঁর আরো একটি বিখ্যাত আপ্তবাক্য স্মরণ করিয়ে দেই৷ যার মূলকথা অনুসরণ করে দীর্ঘদিন চীনের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হয়েছে। উক্তিটি হল - 'Hide one's strength and bide one's time'
দেও জিয়াং পিং-এর কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রকে আশাবাদী করেছিল যে, এর মধ্য দিয়ে চীন গভীরভাবে উদার ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় একীভূত হবে, গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে শুরু করবে। কিন্তু চীন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পথ হাঁটলেও উদারবাদী আর্দশকে গ্রহণ করেনি, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের আর্দশকেই গ্রহণ করেছে।

১৯৮৯ সালের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের মোহনীয় আশাবাদের বেলুন ফুটো করে দেয়। এরপর ১৯৯৬ সালে তাইওয়ান স্ট্রেইট সংকট, ১৯৯৯ সালে ন্যাটো কর্তৃক বেলগ্রেডে চীনের দূতাবাসে বোমা বিস্ফোরণ -প্রভৃতি ঘটনা চীনের কর্তৃত্ববাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ যুক্তরাষ্ট্রের মোহমুক্তি ঘটায়।

একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই চীনকে যুক্তরাষ্ট্র নিজের শত্রু ভাবতে শুরু করে। ট্রাম্প আমলে বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে শুল্ক আরোপের বাহারি খেলা। অনেকের প্রত্যাশা ছিল বাইডেনের আগমন চীন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনবে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ইঙ্গিত দিচ্ছে সামনের দিনগুলোতে দেশ দুটির মধ্যকার বিরোধ নতুন মাত্রা পাবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর