প্রথম পাতা
পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ৫
বাঁশখালী রণক্ষেত্র
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২০২১-০৪-১৮
চট্টগ্রামে বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভে গুলির ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাঁশখালী উপজেলায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯) ও রনি হোসেন (২২)। চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিহত শ্রমিকের নাম হাবিবুল্লাহ (১৯)। বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের ৬ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।’
বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শফিউর রহমান মজুমদার বলেন, ‘চারজনকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া আহত ১২ জনকে আনা হলে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে।’ এদিকে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, বাঁশখালী এলাকা থেকে ১০-১২ জন গুলিবিদ্ধ শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে একজনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের বেশকিছু দাবি-দাওয়া ছিল। এসব তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিতে চাচ্ছিল। শনিবার সকালে অসন্তোষ বাড়তে থাকে এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে স্থানীয় লোকজনও জড়িয়ে পড়েন।’
চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকালও গণ্ডামারা ইউনিয়ন এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। এ বিষয়ে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা বিক্ষোভের এক পর্যায়ে হামলা চালিয়েছে। শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এতে ৫ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে প্রায় ৫০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ঠা এপ্রিল গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় এ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছিলেন।
বাঁশখালীতে নিহত রাহাতের পরিবারে কান্না: আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিহতদের মধ্যে নিহত মাহমুদুল হক রাহাত (২৪) এর বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে। তার বাড়ি উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের সাহেব নগর গ্রামে। তার পিতা ফালু মিয়া কাটখাল বাজারের একজন চা বিক্রেতা। রাহাতরা ৪ ভাই ও ৩ বোন ছিলেন। রাহাত ৪ ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়। গতকাল দুপুরে তার নিহতের খবর বাড়িতে এসে পৌঁছার পর স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
রাহাতের পিতা ফালু মিয়া জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ কোম্পানির সঙ্গে শ্রমিকদের ছুটি নিয়ে ঝামেলা চলছিল। স্থানীয় বাজারে চা বিক্রি করে কোনোরকমে পরিবারটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু তার স্বল্প আয়ে বৃহৎ এই পরিবারের খরচ সামলানো দিন দিনই দুঃসহ হয়ে ওঠে। এ পরিস্থিতিতে তার অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আশায় এসএসসি পাসের পর বছর খানেক আগে রাহাত বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাকরিতে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু শ্রম বিক্রি করে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় চাকরিতে গিয়ে আদরের ছেলে রাহাতকে এভাবে লাশ হতে হবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি ফালু মিয়া।
রাহাতের এমন মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এলাকাবাসী জানান, রাহাত অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিল। চাকরি করে সে তার বাবাকে সহযোগিতা করতো। কিন্তু সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আগেই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে তাকে।
নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯) ও রনি হোসেন (২২)। চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিহত শ্রমিকের নাম হাবিবুল্লাহ (১৯)। বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের ৬ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।’
বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শফিউর রহমান মজুমদার বলেন, ‘চারজনকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া আহত ১২ জনকে আনা হলে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে।’ এদিকে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, বাঁশখালী এলাকা থেকে ১০-১২ জন গুলিবিদ্ধ শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে একজনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের বেশকিছু দাবি-দাওয়া ছিল। এসব তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিতে চাচ্ছিল। শনিবার সকালে অসন্তোষ বাড়তে থাকে এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে স্থানীয় লোকজনও জড়িয়ে পড়েন।’
চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকালও গণ্ডামারা ইউনিয়ন এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। এ বিষয়ে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা বিক্ষোভের এক পর্যায়ে হামলা চালিয়েছে। শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এতে ৫ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে প্রায় ৫০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ঠা এপ্রিল গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় এ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছিলেন।
বাঁশখালীতে নিহত রাহাতের পরিবারে কান্না: আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিহতদের মধ্যে নিহত মাহমুদুল হক রাহাত (২৪) এর বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে। তার বাড়ি উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের সাহেব নগর গ্রামে। তার পিতা ফালু মিয়া কাটখাল বাজারের একজন চা বিক্রেতা। রাহাতরা ৪ ভাই ও ৩ বোন ছিলেন। রাহাত ৪ ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়। গতকাল দুপুরে তার নিহতের খবর বাড়িতে এসে পৌঁছার পর স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
রাহাতের পিতা ফালু মিয়া জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ কোম্পানির সঙ্গে শ্রমিকদের ছুটি নিয়ে ঝামেলা চলছিল। স্থানীয় বাজারে চা বিক্রি করে কোনোরকমে পরিবারটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু তার স্বল্প আয়ে বৃহৎ এই পরিবারের খরচ সামলানো দিন দিনই দুঃসহ হয়ে ওঠে। এ পরিস্থিতিতে তার অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আশায় এসএসসি পাসের পর বছর খানেক আগে রাহাত বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাকরিতে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু শ্রম বিক্রি করে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় চাকরিতে গিয়ে আদরের ছেলে রাহাতকে এভাবে লাশ হতে হবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি ফালু মিয়া।
রাহাতের এমন মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এলাকাবাসী জানান, রাহাত অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিল। চাকরি করে সে তার বাবাকে সহযোগিতা করতো। কিন্তু সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আগেই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে তাকে।