নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা বিরাজ করছে। ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের জায়গায় ২ জন চিকিৎসককে দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা। এ ছাড়া গত দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটার ও সিজারিয়ান সেবা। আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন বিকল ১ বছর যাবৎ। হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি বিশেষজ্ঞ, এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ, অর্থোপেডিকস, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ, (নাক, কান, গলা) বিশেষজ্ঞসহ ৯ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ রয়েছে। এ ছাড়া আবাসিক মেডিকেল অফিসার সহ ১১ জন মেডিকেল অফিসার ও ৭ জন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার রয়েছে।
মেডিকেল অফিসার ও উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসারের পদগুলোতে সকল ডাক্তার রয়েছে। তারা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে ৯ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাঝে শুধুমাত্র একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ ও অর্থপেডিক ডাক্তার রয়েছে। বাকি ৭ জনের পদে থাকলেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। গত এক থেকে দেড় বছর আগে ৮ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদোন্নতি হওয়ায় তারা অন্যত্র চলে গেলে ৮টি পদই শূন্য রয়েছে। হাসপাতালে একমাত্র বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে রয়েছে গাইনি বিশেষজ্ঞ আকতার জাহান। তিনি গত এক বছর আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন। কিন্তু এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞের অভাবে গত দেড় বছর ধরে গর্ভবতী মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া গত দুই বছর আগেও হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে টিউমার, ফোঁড়া, অর্থোপেডিকস সহ বিভিন্ন রোগের ছোট ও মাঝারি ধরনের অপারেশন নামে মাত্র সরকারি ফি নিয়ে করা হতো। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় প্রায় দেড় বছর ধরে সকল ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অপারেশন থিয়েটারটির আশপাশে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে এক ভূতুড়ে ভাব বিরাজ করছে। সরকারি এ হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন অপারেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে। তাদেরকে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল অথবা ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোতে যেতে হচ্ছে। এদিকে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও ইসিজি মেশিন দীর্ঘ এক বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. আকতার জাহান বলেন, সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন হলেও গত দেড় বছর ধরে এনেসথেসিয়ার পদটি খালি রয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের ঢাকা ও অন্যত্র সিজারিয়ানের জন্য পাঠাতে হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) নূরজাহান আরা খাতুন বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি।