× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আল্লাহ্‌কে সন্তুষ্টির জন্যই ইবাদত

শেষের পাতা

মাওলানা এম এ করিম ইবনে মছব্বির
২১ এপ্রিল ২০২১, বুধবার

আজ মাহে রমজানের অষ্টম দিন। সকল ইবাদতই আল্লাহ্‌কে সন্তুষ্টির জন্য। ইবাদত দেখানোর জন্য নয়। নিরেট, নিখাদ, নিখুঁত উপাসনা একমাত্র তাঁরই জন্য যিনি আমার প্রতিপালক আমাকে দেখছেন। মুমিন অর্থাৎ ঈমান গ্রহণকারী। মুসল্লি, অর্থাৎ নামাজ আদায়কারী। ছাইম অর্থাৎ রোজা পালনকারী। মুজাক্কি অর্থাৎ জাকাত আদায়কারী।
হাজী অর্থাৎ হজ পালনকারী। সকল ইবাদতই হবে একমাত্র মহান আল্লাহকে রাজি এবং খুশি করার জন্য। লোক দেখানো কোনো ইবাদত আল্লাহর নিকট কবুলযোগ্য নয়। অনুরূপভাবে আলিম, হাফিজ, ক্বারী, মুয়াল্লিমগণের ইলিম ও অর্জন হতে হবে মহান আল্লাহকে রাজি এবং খুশি করার জন্য। ইবাদতকারী রিয়ার উপর সন্তুষ্ট থাকবে এবং তা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে না। এমতাবস্থায় সকল ইবাদতই বাতিল হয়ে যাবে। এবং রিয়া বা ছোট শিরক করার কারণে সে গুনাহগার হবে। আমল শেষ করার পর রিয়া অনুভব হবে, এটা সম্পূর্ণ শয়তানের ওয়াছওয়াছা। এতে আমলের কোনো ক্ষতি হবে না। এবং আমলকারীরও কোনো গুনাহ হবে না। কিন্তু অন্য কোনো কারণে ইবাদতটি বাতিল হয়ে যেতে পারে, যেমন আমল করার পর শ্রেষ্ঠত্বকে ও গর্ব প্রকাশ করার জন্য ঐ বিষয়ে গল্প করে বা ছাদাকাহ, জাকাত, অথবা দান-খয়রাতের পর খোঁটা দেয় তাহলে আমলটি বাতিল হয়ে যাবে। নেক কাজ করে যদি দুনিয়া উপার্জন উদ্দেশ্য হয়, তবে তার প্রতিদান অথবা গোনাহ নিয়ত অনুযায়ী হবে। এর তিনটি অবস্থা। নেক আমলের উদ্দেশ্য যদি হয় শুধু উপার্জন করা যেমন শুধুমাত্র বেতন পাবার জন্য নামাজে ইমামতি করা এমতাবস্থায় সে পাপী ও গোনাহগার হবে। রাছুলে পাক (সা.) বলেন, ‘মান তাআল্লামা ইলমান মিম্মা ইয়ুবতাগী বিহী ওয়াজহুল লাহি লা ইয়াতাআল্লামাহু ইল্লা লিইয়ুছিবা বিহী আরাযান মিনাদ দুনিয়া লাম ইয়াযিদ আরফাল জান্নাতি ইয়াওমাল কিয়ামাতি ইয়াআনি রিহুহা।’ অর্থাৎ মহামহিম আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যে ইলিম অর্জন করতে হয়, তা যদি কোনো মানুষ শুধুমাত্র দুনিয়ার সম্পদ উপার্জনের উদ্দেশ্যে শিক্ষা গ্রহণ করে, তবে সে কিয়ামত দিবসে বেহেশতের সুঘ্রাণও পাবে না। দুই, আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং দুনিয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে আমল করা। এ ধরনের ব্যক্তির ঈমান এবং ইখলাছ অপূর্ণ। যেমন ব্যবসা এবং হজ করার উদ্দেশ্যে হজে যাওয়া। তার যতটুকু ঈমান ও ইখলাছ থাকবে সে ততটুকু সওয়াব পাবে। তিন, শুধু একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের উদ্দেশ্যে নেক আমল করবে। কিন্তু যথাযথ কর্ম সম্পাদনের নিমিত্তে শ্রমের মূল্য হিসেবে কিছু পারিশ্রমিক গ্রহণ করবে এ ক্ষেত্রে নেক আমলসমূহে পূর্ণ সওয়াব পাবে। পারিশ্রমিক গ্রহণের পরও তার সওয়াব কম হবে না। রাছুলে পাক (সা.) বলেন, ইন্না আহাক্কা মা আখাজতুম আলাইহি আযরান কিতাবুল্লাহি। অর্থাৎ তোমরা যে বিষয়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করো তন্মধ্যে সর্বাধিক উপযুক্ত হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (বুখারী)। একনিষ্ঠ ভাবে নেক আমলকারীরা তিন শ্রেণিতে বিভক্ত। এক, নিম্নস্তর, শুধুমাত্র সওয়াব কামাই এবং আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচার জন্য আমল করবে। দুই মধ্যবর্তী স্তর, মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং তাঁর নির্দেশ পালনার্থে আমল করবে। তিন, উচ্চস্তর- মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, সম্মান এবং ভয় রেখে তাঁর ইবাদত করবে। এটা হচ্ছে ছিদ্দিকদের স্তর। সব সময় মহান আল্লাহর নিকট তওবা করা ওয়াজিব। গোনাহের মাঝে লিপ্ত হওয়া এটা মানুষের অতি স্বাভাবিক মজ্জাগত স্বভাব। রাছুলে পাক (সা.) এরশাদ করেন যে, কুল্লু ইবনি আদামা অথবা কুল্‌ল্বনী আদামা খাতাউন ওয়া খাইরুল খাতাইন আত তাওয়াবুন। অর্থাৎ আদম সন্তান সবাই ভুল করে, ভুলকারী অথবা অপরাধীদের মাঝে তারাই সবচেয়ে উত্তম যারা আল্লাহর নিকট তওবাহ করে (তিরমিজি)।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর