লালমনিরহাটে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনকে লাঞ্ছনা এবং নির্যাতনের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে)। এতে বলা হয়েছে লালমনিরহাটের কুলাঘাট এলাকায় মাদক পাচারের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছিলেন বাসসের জেলা প্রতিনিধি শাহিন। সেখানে তাকে লাঞ্ছনা ও নির্যাতন করে বিজিবি। ১৫ই এপ্রিল শাহিন ও তার বন্ধু সোহাগ ইসলামকে বিজিবি সদস্যরা লাঠি নিয়ে প্রহার করে। কুলাঘাট এলাকায় মাদক পাচার নিয়ে রিপোর্ট করার জন্য উপস্থিত হওয়ার পরই তাদের ওপর এ হামলা হয়। এতে তাদের চোখ, কাঁধ ও শরীরে আঘাত করা হয়। আইএফজে বলেছে, কুলাঘাট এলাকায় সফর করার সময় বিজিবির একটি পেট্রল টিম তাদেরকে থামায়। কথোকথনের সময়ে সাংবাদিক শাহিন ওই এলাকায় মাদক পাচার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান।
এতে বিজিবি কুলাঘাট স্পেশাল ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার আনোয়ার হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এরপর বিজিবি কর্মকর্তাদের একটি টিম শাহিন ও সোহাগ ইসলামের ওপর আক্রমণ করে। এসব ঘটনার পর ওই সাংবাদিকের হাত ও কোমড়ে রশি বেঁধে তাদেরকে লালমনিরহাট সদর পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিজিবি দাবি করে যে, এই সাংবাদিকের কাছে এক বোতল ফেনসিডিল পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন। পরে বেআইনি মাদক বহনের অভিযোগে সাংবাদিক শাহিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে বিজিবি। মামলা ওঠে আদালতে। ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে আদালত তাকে জামিন দিয়েছে। আইএফজে আরো বলেছে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদেরকে মিথ্যা অভিযোগে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্যাতন ও শাস্তি দেয়া হয়। এমন অনেক ঘটনার মধ্যে এটি একটি। আইএফজে আরো বলেছে, এসব অভিযোগের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ অন্যান্য আইন সাধারণভাবে অপব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) বলেছে, বর্তমানে এই ঘটনাটি তদন্ত করছে তারা। ‘বাসসের সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনকে গ্রেপ্তার, নির্যাতন এবং হ্যান্ডকাফ পরানের বিরুদ্ধে আমরা দৃঢ় প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ আইএফজে বলেছে, মিথ্যা অভিযোগ এবং আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সাংবাদিকদের শাস্তি দেয়া একটি প্রবণতায় পরিণত হয়েছে বাংলাদেশে। এই মামলার পূর্ণাঙ্গ এবং সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছে আইএফজে। শাহিন ও ইসলামের ওপর হামলায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত সরকারের। অবিলম্বে এভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।