বিশ্বজমিন

স্ত্রীর প্রাণভিক্ষা স্বামীর

আমার স্ত্রী মারা যাচ্ছেন, তাকে ভর্তি করুন

মানবজমিন ডেস্ক

২০২১-০৪-২২

দিল্লির লোকনায়েক জয়প্রকাশ হাসপাতাল (এলএনজেপি)। এর বাইরে এম্বুলেন্স, প্রাইভেট কারের সারি। তাতে মারাত্মক অসুস্থ করোনা রোগী। নিশ্বাস নিতে জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন তারা। এ অবস্থায় রুদ্ধশ্বাসে এখানে ওখানে ছুটছেন তাদের স্বজনরা। সৃষ্টি হচ্ছে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। এমন এক যুদ্ধে নিজের স্ত্রী রুবি খানকে (৩০) বাঁচাতে প্রাণপণ ছুটছেন তার স্বামী আসলাম খান। মোটরসাইকেলে স্ত্রীকে নিয়ে তিনটি হাসপাতালে ঘুরেছেন। সবাই তাকে হতাশ করেছে। কেউই ভর্তি নেয়নি রুবি খানকে। অবশেষে উপায়হীন ক্লান্ত আসলাম খান ওই হাসপাতালের স্টাফদের কাছে নিজের স্ত্রীর প্রাণভিক্ষা চান এভাবে- আমার স্ত্রী মারা যাচ্ছেন। দয়া করে তাকে ভর্তি করুন।
কিন্তু তার এই কান্না হাসপাতালের চারদেয়ালে প্রতিধ্বনি তুলে শুধু ফেরত আসছে। আর কিছু নয়। তাকে ফিরিয়ে দিলেন হাসপাতালের স্টাফ। কারণ, আর কোনো বেড খালি নেই। সবই বোঝেন আসলাম। কিন্তু বুঝেও বোঝেন না। কারণ, তার চোখের সামনে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছেন তার ভালবাসা, তার স্ত্রী। তাই হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে কিছুতেই কান্না থামাতে পারছিলেন না। তিনি সে অবস্থায়ই বলেন, এমনকি আমি হাসপাতালের স্টাফদের পায়ে ধরতেও প্রস্তুত আছি। কিন্তু বার বারই তারা বলছেন, কোনো বেড খালি নেই। আমি জানতে চাইছি, তবে কি হাসপাতালের মেঝেতে রেখে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা করাতে পারি? কিভাবে আমার চোখের সামনে স্ত্রীকে মরে যেতে দিতে পারি? এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

ভারত সরকার হাসপাতালে অক্সিজেন, টিকা, বেড নিশ্চিত করার বার বার প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও করোনা রোগী এবং তার পরিবারের সদস্যরা খুব কমই স্বস্তি পাচ্ছেন। ওদিকে অব্যাহত গতিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এরই মধ্যে এলএনজেপি হাসপাতালের বাইরে এম্বুলেন্স আর প্রাইভেট কারে রোগীর দীর্ঘলাইন। অসহায় অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রচ- এক হতাশা। তারা তবু অপেক্ষা করছেন, একসময় তাদের প্রিয়জনকে ভর্তি করে নেয়া হবে। হাসপাতাল কর্মকর্তারা যখন বলছেন, কোন বেড খালি নেই, তখন কয়েক ডজন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। এই ক্ষোভ হৃদয় ভেঙে যাওয়ার মতো। দিল্লিতে করোনা চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে বড় হাসপাতাল হলো এলএনজেপি হাসপাতাল। এর বাইরে অপেক্ষায় আছেন যারা তাদের মধ্যে কিছু মানুষ বলেছেন, তাদের পরিবারের কিছু সদস্য বা কয়েকজন সদস্য প্রথমে করোনা নেগেটিভ হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অক্সিজেন লেভেল কমে গেছে।

এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার এই আহ্বানের পর অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে বুধবার হাইকোর্টে ম্যারাথন শুনানি হয়। ০
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status