× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাতকানিয়ায় বাজার ইজারা এবং...

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
৮ মে ২০২১, শনিবার
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় বাজার ইজারার দেড় কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে বাজারের পূর্ণমেয়াদকাল শেষ করলেন উপজেলার কেরানীহাট বাজারের ইজারাদার ও উত্তর সাতকানিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ওচমান আলী। উপজেলা প্রশাসন কয়েকবার অর্থ পরিশোধের তাগিদ দিলেও তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি। বরং লোকসান দেখিয়ে রাজস্ব মওকুফের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন।
সূত্রমতে, সরকারি হিসাব অনুযায়ী কোনো ইজাদারের কাছে পূর্বের কোনো বকেয়া থাকলে তিনি পরবর্তীতে ইজারার যোগ্যতা হারান। তবে ওচমান আলী পুনরায় ওই বাজারের ইজারা পেয়ে অতীতের ন্যায় পুরো টাকা  পরিশোধ করেন নি। কিন্তু ইজারা উত্তোলন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বকেয়া ও চলতি বছরের টাকা দেয়ার জন্য ইজারাদারকে চিঠি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালে সাতকানিয়া উপজেলার অন্যান্য বাজারের মতো জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে দরপত্র আহ্বান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সে সময় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকায় এই বাজারের ইজারাপ্রাপ্ত হন যুবলীগ নেতা ওচমান আলী। এর মধ্যে পে-অর্ডারের মাধ্যমে তিনি পরিশোধ করেছেন ৬৫ লাখ টাকা। বাকি ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা পরিশোধ না করে বাজারের মেয়াদকাল শেষ করেন।
এদিকে, গতবছরের ইজারা উত্তোলনের মেয়াদ শেষে চলতি বছরের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়ম অনুযায়ী পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে পুনরায় বাজারের দরপত্র আহ্বান করলে ওচমান আলী সেখানেও ইজারাদার হিসেবে দরপত্র দাখিল করেন। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে তিনি পুনরায় কেরানীহাট বাজারের ইজারা পান। এতে সর্বসার্কুল্যে ইজারার মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৯০ লাখ টাকা ইজারা বাবদ পরিশোধ করলেও পূর্বের টাকা এখনো অপরিশোধিত। এ অবস্থায় পুনরায় ইউএনও’র কোনো কার্যাদেশ না পেলেও ইজারা উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন ওই নেতা।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, সরকারকে রাজস্ব না দিয়ে ফাঁকি দেয়া গর্হিত অপরাধ। এই রাজস্বের টাকা পরিশোধ না করে কিভাবে তিনি যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে পুনরায় ইজারা নেন? এবছরও কিভাবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ইজারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। রাজস্ব ফাঁকির কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত চক্রটিকে খুঁজে বের করারও দাবি জানান তিনি।
সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ মোতালেব সিআইপি বলেন, এ বিষয়ে ইউএনও সাহেবকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। শুনেছি তিনি (ইউএনও) ইজারাদারকে চিঠি দিয়েছেন টাকা পরিশোধের জন্য। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, কেরানীহাট বাজারের ইজারাদারকে বকেয়া পরিশোধের জন্য ইতিমধ্যে ৩টি চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি এখনো চিঠির জবাব দেননি। বকেয়া পরিশোধ না করে পুনরায় ইজারা উত্তোলনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে ওচমান আলী মানবজমিনকে বলেন, করোনার কারণে বাজারের ইজারা উত্তোলনে লোকসান হওয়ায় ২০২০ সালের বকেয়া টাকা মওকুফের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছি। আবেদনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় এখনো বকেয়াগুলো পরিশোধ করা হয়নি। এছাড়া রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলেও দাবি করেন এই যুবলীগ নেতা।
বিগত বছর ও চলতি বছরের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ না করে কিভাবে ইজারা আদায় অব্যাহত রেখেছেন এমন প্রশ্নে ওচমান আলী বলেন, চলতি বছরও করোনার কারণে অফিসিয়াল কাজ চলেনি। এবারো যেহেতু ৯০ লাখ টাকার পে-অর্ডার দেয়া আছে, তাই রানিং ইজারাদার হিসেবে ইজারা উত্তোলন করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাকি সব টাকা পরিশোধ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর