সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে দৈনিক মৃত্যু ছাড়িয়েছে চার হাজার। টালমাটাল পুরো দেশ। অক্সিজেনের লড়াইয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মানুষের আহাজারি। কিন্তু এই করোনা দুর্যোগের মধ্যেও ভারতের বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নরেন্দ মোদির তোড়জোড় নিয়ে ক্ষোভ চলছে দেশজুড়ে।
ইতিমধ্যেই এই ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বুধবার দেশটির দুই নাগরিক দিল্লি হাইকোর্টের কাছে আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের একজনের মা কোভিড আক্রান্ত।
আইনজীবী নিতিন সালুজার করা আবেদনে বলা হয়, শ্রমিক শিবির থেকে নির্মাণ শ্রমিকরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। নির্মাণস্থলে কাজ জারি রাখা হলে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যদিও, শুক্রবারের (৭ মে) শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্মাণ কাজ বন্ধের আবেদন খারিজ করে। তবে এই প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক থেমে নেই।
দেশের এই বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৮০ কোটি ডলার ব্যয়ে ভারতের নতুন সংসদ ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন নির্মাণ কাজকে ‘জরুরি পরিষেবার’ অন্তর্ভূক্ত করেছেন। করোনার তীব্র সঙ্কটের মধ্যেও চলছে এই স্থাপনাগুলোর নির্মাণ কাজ।
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এই প্রকল্পের কাজ চলায় দেশটির সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনীতিকরা সরব হয়েছেন, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যখন দেশজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সঙ্কটে তখন এই প্রকল্পের অসামঞ্জস্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
দিল্লিতে লকডাউন চলার সময়ও কেন্দ্রিয় ভিস্তা পুনঃউন্নয়ন প্রকল্প নামে পরিচিত এই ব্যয়বহুল সংস্কার কাজ চলছে।
ভারতের রাজনীতিবিদরা এই পরিকল্পনাকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলেছেন।
ভারতের সাবেক অর্থ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা টুইটে লিখেন, ‘মানুষ কোভিডে মারা যাচ্ছে, অথচ (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে) প্রাধান্য পাচ্ছে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প। আমাদের কি এর পরিবর্তে হাসপাতাল নির্মাণ করা উচিত নয়? একজন ক্ষমতালিপ্সু মানুষকে নির্বাচনের জন্য জাতিকে আর কত মূল্য দিতে হবে?’
এ সপ্তাহের শুরুতে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী বলেন, ‘মানুষের জীবনের চেয়েও অহংবোধ বড় (প্রধানমন্ত্রীর)।’
সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি নতুন প্রকল্পকে 'উদ্ভট' বলে মন্তব্য করেন।