করোনার মাহামারি ঠেকাতে দেশে চলছে লকডাউন। আর এই লকডাউনের সুবিধা নিয়ে একটি মহল নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। দেশের সর্ববৃহৎ ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির (বিসিডিএস) কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন (২০২১-২৩)কে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। লকডাউনের সুবিধা নিয়ে পটুয়াখালীর এক ওষুধ আমদানিকারক সংগঠনের ৪৩টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৫০টি মনোনয়নপত্র ক্রয় করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তার অবৈধ চাপে লকডাউনের মধ্যেই নির্বাচন করার চেষ্টা চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। অপরদিকে সদস্যরা নির্বাচন স্থগিতের দাবি করছেন। করোনার কারণে লকডাউন অব্যাহত থাকায় সারা দেশের প্রার্থীরা ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ঢাকায় গিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে না পারায় সমিতির অধিকাংশ সদস্যরা এমন দাবি তুলেছেন। বিসিডিএস’র দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৭ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র সংগ্রহের তারিখ ছিল ২২শে এপ্রিল। কিন্ত করোনার কারণে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হলে দুই দফায় মনোনয়নপত্র সংগ্রহের তারিখ পরিবর্তন করা হয়। নির্বাচনী বোর্ড ঘোষিত মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সর্বশেষ তারিখ ছিল গত ৬ই মে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় এবং লকডাউন অব্যাহত থাকায় ওই তারিখে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রার্থীরা ঢাকায় গিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারেননি। আবার নির্বাচনী বোর্ডও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের তারিখ ৬ই মে পুনঃনির্ধারণ করেনি। এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান এমন ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন স্থগিত অথবা তফসিল পুনঃনির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। বিসিডিএস’র কেন্দ্রীয় সদস্য চট্টগ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী আশিষ কুমার চৌধুরী এবং রাজশাহীর মো. সেলিম পারভেজ আসলাম জানান, তারা পরিচালক পদে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্ত বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঢাকায় গিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তাই এ দুই ব্যবসায়ীর দাবি হয় নির্বাচন স্থগিত করা হোক না হয় নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা হোক। একই দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অপর এক ওষুধ ব্যবসায়ী দোলন কান্তি দাস। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ওষুধ ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। এজন্য ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন মো. শাহ জালাল নামের এক ব্যবসায়ী একাই পরিচালক পদে ৫০টি ফরম সংগ্রহ করেছেন। এ ব্যাপারে বিসিডিএস’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী সারা দেশের কেমিস্টদের পক্ষে ঢাকায় গিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন স্থগিত অথবা তফসিল পুনঃনির্ধারণ করা প্রয়োজন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিডিএস’র নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন আছে নির্বাচন চালিয়ে নেয়ার জন্য। একাধিকবার তফসিল পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। তাই নির্বাচন আর ঝুলিয়ে রাখা ঠিক হবে না। যদি পরিস্থিতির অবনতি না হয় তাহলে তফসিল অনুযায়ী ১৭ই জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।