× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চাহিদামতো ইফতারি না দেয়ায় অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার অভিযোগ

অনলাইন

ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি
(২ বছর আগে) মে ৯, ২০২১, রবিবার, ৩:০৬ অপরাহ্ন

সিলেটের ওসমানীনগরে এক গৃহবধূর পিতার বাড়ি থেকে পাঠানো ইফতারিতে স্বামীর জন্য আলাদা সাজানো থাল না থাকার জের ধরে  স্বামী ও শাশুড়ি নির্যাতন করে ৭ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মারা যাওয়া শরীফা বেগম (২০) নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার মেয়ে।  

থানায় গ্রেপ্তারকৃত স্বামী ও শাশুড়ির দাবি- পরিবারের  সবার অজান্তে শরীফা আত্মহত্যা করেছে। যদিও শনিবার দুপুরে শরীফার স্বামীর বাড়ির নিজ ঘরের বিছানা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।   

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর ছেলে আরশ আলীর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মেয়ে শরীফার। বিয়ের কিছু দিন পর যৌতুকসহ নানা অজুহাতে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগম নির্যাতন শুরু করেন গৃহবধূ শরীফার ওপর। নিজে অন্তঃসত্ত্বা থাকায় তাদের নির্যাতন সহ্য করে গর্ভের সন্তানের আলোর মুখ দেখাতে তাদের সকল নির্যাতন সহ্য করেই স্বামীর বাড়িতে পড়ে থাকেন শরীফা।
চলতি রমজান মাসে তার পিত্রালয় থেকে ইফতারি দিতে দেরি করায় এবং ইফতারির সাথে স্বামীর জন্য আলাদাভাবে সাজানো থাল না দেয়ায় অন্তঃসত্ত্বা শরীফার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।  
   
শুক্রবার সন্ধ্যায় শরিফার পিত্রালয় থেকে স্বামীর বাড়ির লোকজনের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না আসাকে কেন্দ্র করে শাশুড়ির সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে আরশ আলী ও মিনারা বেগম মিলে মারপিট করেন শরীফাকে। বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শরিফা তার ভাইকে অবগত করে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন। এমতাবস্থায় সাহরির সময় শরীফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার ভাই-বোনেরা। শনিবার শরীফার বড় বোন শিপন আক্তার শরীফার স্বামী-শাশুড়ির জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আরশ আলীর বাড়ির (বোনের বাড়ী) উদ্দেশ্যে রওনা দিলেই পথিমধ্যে শরীফার ভাসুরের মাধ্যমে খবর পান তার বোন খুবই অসুস্থ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে আবার খবর আসে শরীফা আত্মহত্যা করে মারা গেছেন।

খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শরিফার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।    

নিহতের বড় বোন শিপন আক্তার ও ভাই মিনার হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার বোনের ওপর তার স্বামী ও শাশুড়ি যৌতুকসহ নানা অজুহাতে নির্যাতন করতো। তাদের নির্যাতনের কারণে আমরা তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে আমার বোন সব কিছু নীরবে সহ্য করে যেত। আমরা গরিব মানুষ লকডাউনের কারণে অভাব অনটনে চলতি রমজান মাসে ইফতারি পাঠাতে দেরি ও আরশ আলীর জন্য আলাদা করে সাজানো থাল না দেয়ায় তার স্বামী ও শাশুড়ি শরীফাকে নানা ভাবে নির্যাতন করে। সর্বশেষ নতুন কাপড় পাঠাতে দেরি করায় তারা আমার বোনকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়ে তার গর্ভের সন্তানটিকেও আলোর মুখ দেখতে দিলো না। তারা তাদের বোন হত্যার বিচার দাবি করেন।

ওসমানীগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বনিক বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর